সিকিমে আকস্মিক বান কেন, জানাল ইসরো
মঙ্গলবারের মেঘভাঙা (ক্লাউড বার্স্ট) বৃষ্টিতে সিকিমের উত্তর পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা অবস্থিত দক্ষিণ লোনক হ্রদের পানি উপচে হ্রদটির প্রায় ৬৫ শতাংশ এলাকা ভেসে গেছে। ভেসে যাওয়া এই এলাকার পরিমাণ প্রায় ১০৫ হেক্টর।
লোনক হ্রদের এই ‘পানি-বিস্ফোরণ’কেই সিকিমের সাম্প্রতিক বন্যার প্রধান কারণ বলে উল্লেখ করেছে ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ইসরো)।
বিজ্ঞাপন
বুধবার নিজেদের ওয়েব সাইটে স্যাটেলাইট থেকে তোলা দক্ষিণ লোনক হ্রদের ছবি প্রকাশ করেছে ইসরো। সেখানে গত ১৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর এবং ৪ অক্টোবরের তোলা ছবি পাশাপাশি রেখে ইসরো বোঝানোর চেষ্টা করেছে, মেঘভাঙা বর্ষণে কী নাটকীয় পরিবর্তন ঘটেছে হ্রদটিতে।
দক্ষিণ লোকন হ্রদটি সৃষ্টি হয়েছে হিমালয়ের বরফগলা পানিতে। টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিপাত ও মঙ্গলবার রাতের মেঘভাঙ্গা বর্ষণে বুধবার ভোরের দিকে রীতিমতো জল-বিস্ফোরণ ঘটে দক্ষিণ লোনকে। হ্রদ উপচে বেরোনো পানির প্রবল স্রোতে তাৎক্ষনিকভাবেই ভেসে যান অন্তত ৪৯ জন মানুষ।
বৃষ্টিপাতের প্রভাবে তিস্তার পানির স্তরও বৃদ্ধি পায় আশঙ্কাজনক হারে। সেই পানির সঙ্গে লোনকের পানি মিশে ভয়াবহ বিপর্যয়কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে রাজ্যজুড়ে।
বুধবার এক বিবৃতিতে ইসরোর পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘স্যাটেলাইট প্রযুক্তির মাধ্যমে লোনক হ্রদ এলাকার ১৭ ও ২৮ সেপ্টেম্বর ও চার অক্টোবরের তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে আমরা এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে টানা ও মেঘভাঙা বর্ষণে লোনক হ্রদে পানি ব্যাপকভাবে বেড়ে যাওয়া এবং হ্রদের সীমানা ভাসিয়ে তা তিস্তার পানির সঙ্গে মিশে যাওয়াই সিকিমের নিম্নাঞ্চলের আকস্মিক বানের প্রধান কারণ।’
প্রসঙ্গত, চীনের সীমান্ত ঘেঁষা ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় এই রাজ্যটিতে গত মঙ্গলবার থেকে বৃষ্টিপাত শুরু হয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুসারে। মঙ্গলবার থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত রাজ্যটিতে ৪০ দশমিক ৯ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। যা অন্যান্য বছরের একই সময়ের স্বাভাবিক ৮ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের হারের তুলনায় প্রায় পাঁচগুণ বেশি।
তারপর বুধবার সকালে দেখা দিয়েছে আকস্মিক বান। সিকিমের মুখ্যসচিব ভি বি পাঠক ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে বলেছেন, আকস্মিক এই পাহাড়ি ঢলে এখন পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে ১০ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং এখনও নিখোঁজ আছেন কমপক্ষে ৮২ জন।
এর বাইরে আহত হয়েছেন ২২ জন; তাদের মধ্যে কয়েক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
সূত্র : এনডিটিভি
এসএমডব্লিউ