তিন শতাধিক কিডনি চুরি-পাচার, চিকিৎসক গ্রেপ্তার পাকিস্তানে
অস্ত্রোপচারের সময় রোগীর দেহ থেকে কিডনি সরিয়ে ফেলা এবং পাচার সংক্রান্ত গ্যাং পরিচালনার অভিযোগে ফাওয়াদ মুখতার নামে এক চিকিৎসক ও তার গ্যাংয়ের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পাকিস্তান পুলিশ। রোববার পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের রাজধানী লাহোর থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ফাওয়াদ মুখতার জানিয়েছেন, এ পর্যন্ত মোট ৩২৮ জন রোগীর দেহ থেকে কিডনি চুরি করেছে তার নেতৃত্বাধীন চক্র। চুরি করা এসব কিডনি বিক্রি করা হতো পাকিস্তানের বিভিন্ন ধনী খরিদ্দারদের কাছে। প্রতিটি কিডনি বিক্রি হয়েছে ১ কোটি রুপিতে।
বিজ্ঞাপন
পুলিশসূত্রে আরও জানা গেছে, অসাধু এই চক্রটির কার্যক্রম ছিল পাঞ্জাব থেকে পাকিস্তান অধিকৃত আজাদ কাশ্মির পর্যন্ত। দীর্ঘদিন হাসপাতালে থেকে চিকিৎসা করানো বা অস্ত্রোপচারের সামর্থ্য নেই এমন রোগীদের ‘টার্গেট’ করত এই চক্র। তারপর নামমাত্র অর্থে অস্ত্রোপচারের লোভ দেখিয়ে এই রোগীদের নিয়ে আসা হতো।
লাহোর ও অন্যান্য শহরের বিভিন্ন ব্যক্তিমালিকানাধীন ভবনকে ক্লিনিক আকারে সাজানো হতো। সেইসব ‘ক্লিনিকে’ অস্ত্রোপচার করা হতো রোগীদের। ফাওয়াদ মুখতার নিজে করতেন এসব অপারেশন, আর এসব অপারেশনের সময় যে ব্যক্তি তার প্রধান সহকারীর ভূমিকায় থাকতেন— তিনি আদতে একজন মোটর মেকানিক।
অস্ত্রোপচারের কারণে এ পর্যন্ত ৩ জন রোগী প্রাণ হারিয়েছেন।
রোববার রাতে এক সংবাদ সম্মেলনে পাকিস্তান পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মোহসিন নাকভি এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘এই নিষ্ঠুর অসাধুচক্রের কার্যক্রমের বিবরণ শুনে আমাদের হৃদয় কেঁপে উঠেছে। আমার জনা মতে, পাকিস্তানে এখনও এমন বেশ কয়েকটি অসাধু চক্র সক্রিয় আছে। তাদের মধ্যে একটি আজ ধরা পড়ল।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সালে মানবদেহের প্রত্যঙ্গ ব্যবসার ওপর নিষিদ্ধ করে পাকিস্তান। এই অপরাধের জন্য যাবজ্জীবন শাস্তি ও মোটা অঙ্কের জরিমানার বিধানও প্রণয়ন করা হয়।
কিন্তু চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্য এখনও নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। চলতি বছর জানুয়ারিতে ১৪ বছরের এক কিশোরের মরদেহ উদ্ধার করেছিল পুলিশ। তার দু’টি কিডনিই সরিয়ে নিয়েছিল পাচারকারীরা।
সূত্র : এএফপি
এসএমডব্লিউ