দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আকস্মিকভাবে উত্তর কোরিয়ায় পালিয়ে যাওয়া ট্র্যাভিস কিং নামের সেই মার্কিন সেনাকে দেশ থেকে বের করে দিয়েছে পিয়ংইয়ং। এরপরই তাকে হেফাজতে নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। গত জুলাই মাসে তিনি দক্ষিণ কোরিয়া থেকে উত্তর কোরিয়ায় পালিয়ে গিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়া থেকে বহিষ্কারের পর মার্কিন সৈনিক ট্র্যাভিস কিং এখন আমেরিকার হেফাজতে রয়েছেন বলে কর্মকর্তারা বলছেন। কিংকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক স্থাপনায় পাঠানোর আগে চীনে মার্কিন হেফাজতে স্থানান্তর করা হয়েছিল।

২৩ বছর বয়সী এই মার্কিন সেনা গত জুলাই মাসে অবৈধভাবে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করেছিলেন। উত্তর কোরিয়ার গণমাধ্যম পরে জানিয়েছিল, মার্কিন সেনাবাহিনীর মধ্যে ‘অমানবিক আচরণ’ ও বর্ণবাদের কারণে তিনি পালিয়ে এসেছেন।

প্রশাসনের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা বুধবার বলেছেন, কয়েক মাসের বেশ ‘জোরদার কূটনীতি’র পর ট্র্যাভিস কিং যুক্তরাষ্ট্রের হাতে ফিরে এসেছেন এবং তিনি তার পরিবারের সাথে কথা বলেছেন। ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ‘কিং তার বাড়িতে ফেরার সুযোগ পেয়ে খুব খুশি এবং তিনি তার পরিবারের সাথে পুনরায় মিলিত হওয়ার জন্য খুব উন্মুখ হয়ে আছেন।’

ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, উত্তর কোরিয়া থেকে যুক্তরাষ্ট্র তার মুক্তি নিশ্চিত করতে কোনও ছাড় দেয়নি।

বিবিসি বলছে, চীনের সীমান্ত শহর ডান্ডংয়ে মার্কিন কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করার পর কিংকে স্টেট ডিপার্টমেন্টের বিমানে করে দক্ষিণ কোরিয়ার একটি মার্কিন বিমানঘাঁটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার জানিয়েছেন, বুধবার বিকেলে তিনি মার্কিন ভূখণ্ডে ফিরে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

এর আগে বুধবার উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা জানায়, পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি ট্র্যাভিস কিংকে দেশ থেকে বের করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে এ বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানায়নি তারা।

ট্র্যাভিস কিং মার্কিন সেনাবাহিনীতে ২০২১ সাল থেকে কাজ করছেন। তিনি মার্কিন সেনাবাহিনীতে মূলত একজন নজরদারি বিশেষজ্ঞ হিসেবে কাজ করতেন। উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশের আগে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় মোতায়েন ছিলেন।

তবে উত্তরে প্রবেশের আগে, হামলার অভিযোগে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় দুই মাসের জন্য জেল খাটেন। গত ১০ জুলাই তিনি মুক্তি পান। মুক্তির পরই তার যুক্তরাষ্ট্রে চলে যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে তার বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়া হতো।

কিন্তু অন্যান্য কর্মকর্তাদের চোখ ফাঁকি দিয়ে বিমানবন্দর থেকে পালিয়ে যেতে সমর্থ হন কিং। এরপর একটি ট্যুর টিমের সঙ্গে চলে যান উত্তর-দক্ষিণকে বিভক্ত করা ডিমিলিটারাইজড জোনে (ডিএমজেড)। সেখান দিয়ে হঠাৎ করে সবাইকে চমকে দিয়ে উত্তর কোরিয়ায় প্রবেশ করেন তিনি।

এই ঘটনার কয়েক মাস পর তাকে দেশ থেকে বের করে দিলো উত্তর কোরিয়া।

টিএম