দাম্পত্য সম্পর্ক রক্ষায় বিশ্বে শীর্ষস্থান অর্জন করেছে ভারত। মার্কিন সাময়িকী ফোর্বস এবং অর্থনীতি ও সামাজিক বিভিন্ন ইস্যু সংক্রান্ত ওয়েবসাইট দ্য গ্লোবাল ইনডেক্সের সাম্প্রতিক এক জরিপে উঠে এসেছে এই তথ্য।

ভারতসহ এশিয়া, ইউরোপ, আফ্রিকা ও আমেরিকার ৩৩টি দেশের বিবাহবিচ্ছেদের শতকরা হার বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ভারতের বিবাহিত যুগলদের মধ্যে বিচ্ছেদের হার মাত্র ১ শতাংশ; অর্থাৎ প্রতি ১০০টি বিবাহিত যুগলের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের পথে হাঁটার প্রবণতা দেখা যায় মাত্র একটি যুগলের বেলায়।

ভারতের পরে এই তালিকায় রয়েছে ভিয়েতনামের নাম। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে বিবাহবিচ্ছেদের হার ৭ শতাংশ।

সর্বনিম্ন বিবাহবিচ্ছেদের  তালিকায় থাকা বাকি দেশগুলো হলো তাজিকিস্তান (১০ শতাংশ), ইরান (১৪ শতাংশ), মেক্সিকো (১৭ শতাংশ), মিসর (১৭ শতাংশ), দক্ষিণ আফ্রিকা (১৭ শতাংশ) এবং ব্রাজিল (২১ শতাংশ)।

অন্যদিকে বিবাহবিচ্ছেদের সর্বোচ্চ হার পরিলক্ষিত হয়েছে দক্ষিণ ইউরোপের দেশ পর্তুগালে—৯৪ শতাংশ। অর্থাৎ দেশটিতে প্রতি ১০০ বিবাহিত যুগলের মধ্যে জীবনের কোনো না কোনো পর্যায়ে বিচ্ছেদের পথ বেছে নেন ৯৪টি যুগল।

সর্বোচ্চ বিবাহবিচ্ছেদের এই তালিকায় পর্তুগালের পরে রয়েছে স্পেন (৮৫ শতাংশ), লুক্সেমবার্গ (৭৯ শতাংশ), রাশিয়া (৭৩ শতাংশ), ইউক্রেন (৭০ শতাংশ), কিউবা (৫৫ শতাংশ), ফিনল্যান্ড (৫৫ শতাংশ)। ফ্রান্স এবং সুইডেন সহ আরও কয়েকটি ইউরোপীয় দেশও বিবাহবিচ্ছেদের হার ৫০ শতাংশের বেশি।

ফোর্বসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিবাহবিচ্ছেদের হার বেশি—এমন সব দেশের মধ্যে একটি সাধারণ প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে। তা হলো— প্রথম বিয়ের ক্ষেত্রে বিচ্ছেদের হার তুলনামূলকভাবে কম,সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ; তবে যেসব নারী ও পুরুষ একবার বিচ্ছেদের পর দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন— তাদের মধ্যে বিচ্ছেদের হার তুলনামূলকভাবে বেশ বেশি— ৬৭ শতাংশ।

ধর্মের নিরিখে ভারতে বিবাহবিচ্ছেদ

আইনের বিভিন্ন ধারা-উপধারা সম্পর্কিত জটিলতার কারণে ভারতীয় দম্পতিদের জন্য বিবাহবিচ্ছেদ রীতিমতো একটি চ্যালেঞ্জিং পর্ব।এখানে বিবাহবিচ্ছেদ সংক্রান্ত আইনি কাঠামো ব্যক্তির ধর্মের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয়। যেমন, হিন্দু, বৌদ্ধ, জৈন এবং শিখদের জন্য, বিবাহবিচ্ছেদের প্রক্রিয়া ১৯৫৫ সালের হিন্দু বিবাহ আইন অনুযায়ী পরিচালিত হয়।

এছাড়া ভারতের মুসলিমরা ১৯৩৯ সালের মুসলিম বিবাহ আইনকে মেনে চলেন। পার্সিদের জন্য, ১৯৩৬ সালের পারসি বিবাহ ও বিবাহবিচ্ছেদ আইন অনুযায়ী পরিচালিত হয়। খ্রিস্টানরা ১৮৬৯ সালের ভারতীয় বিবাহবিচ্ছেদ আইন মেনে চলেন।

অন্যদিকে আন্তঃ-সম্প্রদায়িক বিবাহ, অর্থাৎ বিবাহিত যুগল যদি দুটি আলাদা ধর্মের অনুসারী হন সেক্ষেত্রে  তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ১৯৫৪ সালের বিশেষ বিবাহ আইনের আওতায় পরিচালিত হয়।

ফোর্বসের সমীক্ষা তথ্য অনুযায়ী, ধর্মের নিরিখে হিন্দুদের মধ্যেই ডিভোর্সের হার সবচেয়ে কম। রিপোর্ট অনুযায়ী, হিন্দু জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ বিবাহিত। এই জনসংখ্যার মাত্র ৫ শতাংশ মানুষ বিবাহবিচ্ছেদের পথ বেছে নিয়েছেন।

সূত্র : আজ তক বাংলা

এসএমডব্লিউ