ছয়দিনের সফর শেষে করে দেশের উদ্দেশ্যে রাশিয়া ছেড়েছেন উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং উন। এই সফরে কিমকে বিভিন্ন উপহার দিয়েছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও দেশটির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা। যার মধ্যে রয়েছে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, ড্রোন, রাইফেল। আর কিমকে এসব উপহার এবং উষ্ণ অভ্যর্থনা দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে পশ্চিমারা।

তারা আশঙ্কা করছে, রাশিয়াকে অস্ত্র সহায়তা দিতে পারে পিয়ংইয়ং। যেসব অস্ত্র ইউক্রেন যুদ্ধে ব্যবহার করা হবে।

সফরের শুরুতেই কিমকে দেওয়া হয় রাজকীয় অভ্যর্থনা। এছাড়া এ সফরে তিনি যেসব জায়গায় গেছেন তার বেশিরভাগই ছিল সামরিক স্থাপনা। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি নিষেধাজ্ঞা পাওয়া দেশগুলোর মধ্যে একটি হলো উত্তর কোরিয়া। আর তাদের খাদ্য থেকে জ্বালানি, জ্বালানি থেকে সামরিক প্রযুক্ত সবই প্রয়োজন।

রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা টাস নিউজ জানিয়েছে, কিম উত্তর কোরিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়ার আগে রাশিয়ার সুদূর পূর্বাঞ্চল প্রিমোরের গভর্নর তাকে একটি বুলেট প্রুফ জ্যাকেট ও কয়েকটি ড্রোন উপহার দেন।

টাস আরও জানিয়েছে, এই বুলেট প্রুফ জ্যাকেটটি বুক, ঘাড়, গলা এবং কুঁচকিকে রক্ষা করতে সক্ষম। এছাড়া এটি অন্য জ্যাকেটের তুলনায় হালকাও।

আরও পড়ুন>>> রুশ পারমাণবিক বোমারু বিমান, হাইপারসনিক মিসাইল ও রণতরী দেখলেন কিম

অপরদিকে কিমকে যেসব ড্রোন দেওয়া হয়েছে সেগুলোর মধ্যে পাঁচটি হলো আত্মঘাতী ড্রোন। এছাড়া উপহারের তালিকায় রয়েছে জেরানিয়াম-২৫ বিমান সদৃশ নজরদারি ড্রোন। এছাড়া তাকে এমন কিছু কাপড় উপহার দেওয়া হয়েছে যেগুলো থার্মাল ইমাজিং ক্যামেরায় ধরা পড়বে না। এ সব পণ্য তৈরি করা হয়েছে ওই অঞ্চলে।

যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন রোববার (১৭ সেপ্টেম্বর) এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, কিমের এই সফরটি পুরোপুরি ছিল সামরিক কেন্দ্রিক। তিনি তার সফর শুরু করেছিলেন ভোসতোচনি রকেট উৎক্ষেপণ কেন্দ্র পরিদর্শনের মাধ্যমে। সেখানে তিনি পুতিনের সঙ্গে দীর্ঘ ৫ ঘণ্টা বৈঠক করেছিলেন।

ওই সফরের পর কিম বলেছিলেন, তিনি রাশিয়ার পক্ষে এবং তাদের পবিত্র যুদ্ধের পক্ষে থাকবেন। অপরদিকে পুতিন উত্তর কোরিয়াকে স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের প্রযুক্তিগত সহায়তা দেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা কেসিএনএ গত শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানায়, প্রেসিডেন্ট কিম রাশিয়ার বিমান উৎপাদন খাত নিয়ে খুবই সন্তুষ্ট হয়েছেন। কিমকে রাশিয়া তাদের বেশ কয়েকটি ঘাঁটিতে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে তাদের অত্যাধুনিক বিমানগুলো দেখায়।

কিমের পুরো সফরটি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ইউক্রেন এবং ইউরোপের দেশগুলো বেশ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে। তবে তার এ সফরের ফলাফল কি হবে সে বিষয়টি এখনো নিশ্চিত নয়।

সূত্র: সিএনএন

এমটিআই