মুসলিম বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে মেয়ে স্কুল শিক্ষার্থীদের জন্য মাথা ও মুখঢাকা নেকাব নিষিদ্ধ করেছে মিসর। সোমবার দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এই আদেশ জারি করেছে বলে  জানিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত দৈনিক আখবার আল ইওম।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে সরাসরি ‘নেকাব’ নামটি উল্লেখ করা হয়নি। বলা হয়েছে, ‘মুখমন্ডল আড়াল করে রাখে এমন কোনো পোশাক আর এখন থেকে স্কুল শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।’

আরও বলা হয়েছে, ‘মেয়ে স্কুলশিক্ষার্থীরা চাইলে স্কুলে হিজাব বা হেডস্কার্ফ পরে আসতে পারবে, তবে কোন রঙের হিজাব তারা পরবে— তা নির্ধারণ করবে মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় শিক্ষা দপ্তর বা কর্তৃপক্ষ।’

‘তবে যেসব মেয়ে শিক্ষার্থী স্কুলে হিজাব পরে আসবে, তাদেরকে অবশ্যই স্কুল এবং স্থানীয় শিক্ষা দপ্তরকে নিশ্চিত করতে হবে যে তারা অভিভাবক বা অন্য কারো চাপে পড়ে নয়; সম্পূর্ণ নিজের ব্যক্তিগত ইচ্ছায় হিজাব পরছে।’

বিজ্ঞপ্তিতে হিজাব সম্পর্কে অভিভাবকদের উদ্দেশে নির্দেশনা দিয়ে বলা হয়েছে, ‘শিক্ষার্থীদের পছন্দ-অপছন্দ সম্পর্কে অবশ্যই অভিভাকদের সচেতন থাকতে হবে এবং কোনো শিক্ষার্থীকে হিজাব পরতে অভিভাবকরা জোর করছেন কিনা, সে সম্পর্কে নিয়মিত খোঁজ রাখবে মন্ত্রণালয়।’

আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে স্কুল শিক্ষাবর্ষ শুরু হবে মিসরে। ওই দিন থেকে এই আইন দেশটির সব সরকারি-বেসরকারি স্কুলে কার্যকর করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে মন্ত্রণালয়ের বিজ্ঞপ্তিতে।

এদিকে সোমবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় এই বিজ্ঞপ্তি জারির পর থেকেই এ বিষয়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে মিসরের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সমালোচক নেটিজেনদের একাংশের অভিযোগ, মন্ত্রণালয়ের এই নতুন আদেশ নারীদের অধিকারের পরিপন্থী।

অপর অংশের মতে, নেকাব একটি ‘ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা’ এবং একে অবশ্যই রাজনীতি থেকে দূরে রাখা উচিত।

জায়নাব দাবো নামের এক নেটিজেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে বলেন, ‘নারীরা কী পোশাক করবেন, তা তাদেরই নির্ধারণ করতে দিন। এ ইস্যুতে আমরা রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ চাই না।’

আরেক নেটিজেন বলেন, ‘হিজাব একটি ধর্মীয় বাধ্যবাধকতা। একে রাজনীতির আওতায় আনা উচিত নয়।’

সূত্র : আল আরাবিয়া

এসএমডব্লিউ