মালদ্বীপের বিরোধী দলীয় নেতা মোহাম্মদ মুইজ্জো (বামে)

দক্ষিণ এশিয়ার দেশ মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের প্রথম ধাপে এককভাবে ৫০ শতাংশ ভোট পাননি কোনো প্রার্থী। ফলে রান-অফে গড়িয়েছে এ নির্বাচন। তবে বহুল আলোচিত এ নির্বাচনের প্রথম ধাপে সবাইকে চমকে দিয়ে সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়েছেন বিরোধী দলীয় ও ভারত বিরোধী নেতা মোহাম্মদ মুইজ্জো। অপরদিকে বর্তমান প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন।

এ দু’জনের মধ্যেই এখন রানঅফ নির্বাচন হবে। আর এতে যে সর্বোচ্চ ভোট পাবেন তিনি পর্যটনসমৃদ্ধ এ দেশটিকে পরবর্তী ৫ বছরের জন্য শাসন করবেন।

শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) মালদ্বীপে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।

নির্বাচনে যেসব ভোটার ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন তাতে দেখা গেছে রাজধানী মালের মেয়র ও বিরোধী দলীয় নেতা মোহাম্মদ মুইজ্জো ৪৬ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। অপরদিকে প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়েছেন।

ভোট প্রদান শেখে সমর্থকদের সঙ্গে দেখা করেন প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সোলিহ

মালদ্বীপের এ নির্বাচনটি বেশ গুরুত্বের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করেছে ভারত ও চীন উভয়ই। এই দুই পরাশক্তিই ভারত মহাসাগরের এ দেশটির ওপর নিজেদের প্রভাব বিস্তার করতে চায়।

বিরোধী দলীয় নেতা মোহাম্মদ মুইজ্জোকে ভারত বিরোধী হিসেবে দেখা হয়। নির্বাচনের আগে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট হতে পারলে— মালদ্বীপে ভারতের প্রভাব কমাবেন। আর-চিপেলাগোতে যে অল্প সংখ্যক ভারতীয় সেনা মোতায়েনকৃত আছেন তাদের বের করে দেবেন।

৩৯ বছর বয়সী মোহাম্মদ মুইজ্জোর রাজনৈতিক দল প্রোগ্রেসিভি পার্টি অব দ্য মালদ্বীপের (পিপিএম) নেতৃত্বাধীন জোট ২০১৩ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত যখন ক্ষমতায় ছিল—  তখন চীনের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল মালদ্বীপ। ওই সময় মালদ্বীপ চীনের রোড অ্যান্ড বেল্ট ইনেশিয়েটিভে যোগ দিয়েছিল এবং বড় অবকাঠামো নির্মাণের জন্য বেইজিংয়ের কাছ থেকে বিপুল ঋণ আদায় করে নিয়েছিল।

অপরদিকে ৬১ বছর বয়সী প্রেসিডেন্ট সোলিহ ২০১৮ সালের নির্বাচনে জয় পেয়েছিলেন। ওই সময় মোহাম্মদ মুইজ্জোর দল ব্যাপক দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছিল।

তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পরই ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। এই নেতা অবশ্য ভারতের কাছ থেকেও অবকাঠামো নির্মাণের জন্য ঋণ আদায় করেন।

নির্বাচনের আগে যেসব জরিপ চালানো হয়েছিল সেগুলোতে প্রেসিডেন্ট সোলিহই এগিয়ে ছিলেন। কিন্তু আগের তুলনায় ভোটারদের উপস্থিতি কম এবং দুর্নীতি দমনে তেমন প্রভাব ফেলতে না পারায় তাকে মানুষ কম ভোট দিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর মালদ্বীপে রান-অফ নির্বাচন হবে। এবারের নির্বাচনে ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ওই ৮ প্রার্থীর মধ্যে যারা ভালো ভোট পেয়েছেন এখন তাদের সঙ্গে জোট বেধে এরপর রান-অফ নির্বাচনে লড়বেন এই দুই প্রার্থী।

সূত্র: আল জাজিরা

এমটিআই