জি-২০ সম্মেলন : এবার হাজারো পথকুকুর সরাল দিল্লি
বিশ্বের শীর্ষ অর্থনৈতিক জোট জি-২০’র সম্মেলন উপলক্ষে রাজধানীর সৌন্দর্য বর্ধন সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্তুতির কাজ শেষ করে এনেছে নয়াদিল্লি। সেই প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বিমানবন্দর থেকে সম্মেলনস্থল প্রগতি ময়দান ও তার আশপাশের এলাকা থেকে সরানো হয়েছে এক হাজারেরও অধিক পথকুকুর।
আগামী ৯-১০ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লির প্রগতি ময়দানের ‘ভারতীয় মন্ডপম’ কনভেনশন সেন্টারে বসবে জি-২০ সম্মেলন। এই সম্মেলনে যোগ দিতে দিল্লি আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন, ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক, সৌদি যুবরাজ ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট জ্যাক শিরাকসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান এবং তাদের নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধি দলের সদস্যরা।
বিজ্ঞাপন
গুরুত্বপূর্ণ এই বিদেশি অতিথিদের আগমন উপলক্ষে রাজধানীর সৌন্দর্য বর্ধনের ক্ষেত্রে কোনো ত্রুটি রাখতে চাইছে না ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। তাই দিল্লির রাজ্যসরকারের পরিবর্তে কেন্দ্রীয় সরকারই ব্যাপারটি দেখভাল করছে।
নয়াদিল্লির পৌরসভা এমসিডির তথ্য অনুযায়ী (দ্য মিউনিসিপ্যাল করপোরেশন অব দিল্লি) পুরো রাজধানীতে প্রায় ৬০ হাজার পথকুকুর রয়েছে। দিল্লির বাসিন্দারাই এই কুকুরগুলোকে খাবার-আশ্রয় দেন।
প্রাণী অধিকার সংস্থাগুলোর অভিযোগ, কুকুরগুলোকে ধরার ক্ষেত্রে পৌরসভার নির্ধারিত গাইডলাইন অনুসরণ করা হয়নি। ‘নেট ক্যাচিং’ বা ‘হ্যান্ড ক্যাচিং’র পরিবর্তে একটি রডের মাথায় দড়ির ফাঁস ব্যবহার করে ‘নিষ্ঠুর ভাবে’ ধরা হয়েছে পথকুকুরগুলোকে।
দিল্লির পথপ্রাণী সংস্থা পিপলস ফর অ্যানিমেলসের ট্রাস্টি অম্বিকা শুক্লা রয়টার্সকে বলেন, ‘এবারের জি-২০ সম্মেলনে ভারতের স্লোগান—এক পরিবার, এক ভবিষ্যৎ। কিন্তু বাস্তবের সঙ্গে এই স্লোগানের কোনো মিল নেই। পথকুকুর আমাদের পরিবারের সদস্যদের মতো। আমরা যদি তাদের আশ্রয় দিতে না পারি সেক্ষেত্রে এই স্লোগানের গুরুত্ব কমে যায়।’
আরেক পথপ্রাণী অধিকার সংস্থা হাউস অব স্ট্রে অ্যানিমেলসের প্রতিষ্ঠাতা সঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, ‘দিল্লির বাসিন্দারা নিয়মিত পথকুকুরদের খাওয়ায়। যদি বিদেশি অতিথিরা এ দৃশ্য দেখত— তাহলে আমাদের সম্পর্কে তাদের মনে ভাল ধারণা হতো। পথকুকুর সরানোর কোনো প্রয়োজন ছিল না।’
শুক্রবার এক বিবৃতিতে অবশ্য এমসিডি জানিয়েছে, এই অবস্থা একেবারেই সাময়িক। বিভিন্ন এলাকা থেকে যেসব কুকুরকে ধরা হয়েছে, সেসব এলাকা ট্র্যাক করা হয়েছে এবং শিগগিরই নিজ নিজ এলাকায় ফের ফেরত পাঠানো হবে পথকুকুরগুলোকে। তবে কবে নাগাদ পাঠানো হবে— তা জানায়নি এমসিডি।
উল্লেখ্য, এর আগে নয়াদিল্লির সৌন্দর্য বর্ধনের অংশ হিসেবে বিভিন্ন বস্তি উচ্ছেদের পাশপাশি রাজধানী থেকে বানরও সরিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের বাহিনী।
সূত্র : রয়টার্স
এসএমডব্লিউ