রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের নির্দেশে ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা করে রুশ সৈন্যরা। তাদের সেই হামলার পর বিশ্বব্যাপী হঠাৎ করে ‘বিখ্যাত’ এবং ‘হিরো’ হয়ে ওঠেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি।

তবে এ যুদ্ধ প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির ব্যক্তিগত জীবনেও অনেক প্রভাব ফেলেছে। তার স্ত্রী ওলেনা জেলেনেস্কা জানিয়েছেন, শুধুমাত্র যুদ্ধের কারণে এখন নিজের স্বামীর সঙ্গে থাকতে পারছেন না তিনি। জেলেনস্কি থাকছেন এক জায়গায়। আর পুত্র ও কন্যাকে নিয়ে তিনি আলাদা আরেক জায়গায় থাকছেন। কিন্তু এ বিষয়টি মানতে পারছেন না ইউক্রেনের ফার্স্ট লেডি।  

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সঙ্গে মঙ্গলবার (৫ সেপ্টেম্বর) এক সাক্ষাৎকারে এমন তথ্য জানিয়েছেন তিনি।

ওলেনা বলেছেন, ‘এটি হয়ত কিছুটা স্বার্থপরতা। কিন্তু আমার— আমার পাশে স্বামীকে প্রয়োজন… কোনো ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বকে নয়। কিন্তু আমরা শক্ত থাকছি। আমাদের শারীরিক এবং মানসিক দুই দিক দিয়েই শক্তি আছে এবং আমি নিশ্চিত আমরা একসাথে এটি মোকাবিলা করব।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘আমরা আমার স্বামীর সঙ্গে থাকছি না। পরিবার আলাদা হয়ে গেছে। আমাদের একে-অপরের সঙ্গে দেখা হয়… কিন্তু যতটা চাই ততটা নয়। আমার ছেলে তার বাবাকে মিস করে। এটি আমাকে খুবই পীড়া দেয় যখন দেখি আমাদের সন্তানেরা আর কোনো পরিকল্পনা করে না। এই বয়সে… আমার মেয়ের বয়স ১৯… ঘোরাঘুরির স্বপ্ন দেখে, নতুন কিছু নিয়ে ভাবে, আবেগ থাকে। কিন্তু আমার মেয়ের এখন আর সেই সুযোগ নেই।’

ওলেনা জেলেনেস্কা আরও বলেছেন, ‘জেলেনস্কির ওপর আমি বিশ্বাস রাখি এবং তাকে সমর্থন করি। আমি জানি তার পর্যাপ্ত শক্তি আছে। আমি জানি, যে কোনো মানুষের জন্য এ ধরনের পরিস্থিতি খুবই কঠিন হতো। কিন্তু জেলেনস্কি খুবই শক্তিশালী এবং প্রাণোচ্ছল মানুষ। আর এই প্রাণোচ্ছলতাই এখন আমাদের প্রয়োজন।’

‘কেউ জানে না কী হবে। বড় কথা হলো এই একুশ শতকে এসে, ইউরোপের মাঝে এ ধরনের যুদ্ধ শুরু করা হবে, যেটি হবে খুবই নিষ্ঠুর, একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। আমি কখনো ভাবিনি আমি এ ধরনের দায়িত্বে পড়ব। আমাদের জয়ের ক্ষেত্রে বড় আশা আছে, কিন্তু আমরা জানি না এটি কখন আসবে। আর এই দীর্ঘ প্রতীক্ষা, সার্বক্ষণিক যন্ত্রণা, এটি প্রভাব পড়ছে।’ যোগ করেন ওলেনা।

সূত্র: বিবিসি

এমটিআই