চীন-মিয়ানমার সীমান্ত শহরে দু’মাসে সর্বোচ্চ করোনা সংক্রমণ
মিয়ানমারের সীমান্তবর্তী চীনের রুইলি শহরে রোববার মোট ৩২ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, আরো ১৮ জনের দেহে করোনার উপসর্গ দেখা দিয়েছে। নগরের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, রুইলিতে গত দু’মাসে দৈনিক সংক্রমণের বিবেচনায় এই সংখ্যা সর্বোচ্চ।
সংক্রমণের এই উল্লফনের জন্য চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ মাধ্যমগুলো সম্প্রতি সেখানে মিয়ানমার থেকে আসা আশ্রয়প্রার্থীদের দায়ী করেছে। চীনের স্বাস্থ্য বিভাগসূত্রে জানা গেছে, সোমবার রুইলিতে যারা করোনা পজিটিভ হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন, তাদের ১১ জন মিয়ানমারের নাগরিক।
বিজ্ঞাপন
চীনের ইউনান প্রদেশের রুইলি শহর দেশটির অন্যতম প্রধান ‘ট্রানজিট পয়েন্ট’ হিসেবে পরিচিত। লাউস-মিয়ানমার এবং ভিয়েতমান- তিন দেশের সীমান্তে অবস্থিত এই শহরটি বরাবরই অবৈধ অভিবাসীদের জন্য ‘স্বর্গরাজ্য’ বলে বিবেচিত হয়ে আসছে।
এছাড়া সম্প্রতি মিয়ানমারে রাজনৈতিক অস্থিরতা দেখা দেওয়ায় দেশটি থেকে বেশ কিছুসংখ্যক শরণার্থী চীনে আশ্রয় নিয়েছেন। তাদের অধিকাংশই অবস্থান করছেন রুইলি ও ইউনানের বিভিন্ন শহরে।
চীন সরকার অবশ্য দেশের অন্যান্য অঞ্চলের মতো রুইলিতেও গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে। সেই কর্মসূচি চলমান আছে এখনো।
যে ভাইরাসের কারণে গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিপর্যয় পার করছে বিশ্ব, সেই সার্স-কোভ-২ ভাইরাসের (করোনাভাইরাস) উপস্থিতি প্রথম দেখা গিয়েছিল চীনে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরের সী ফুড মার্কেট এলাকায় প্রথম এক ব্যক্তি এই ভাইরাসের সংক্রমণে মারা যান। ওই মৃত্যুকেই এখন পর্যন্ত করোনায় প্রথম মৃত্যু বলে বিবেচনা করে আসছেন আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো বরাবরই অভিযোগ করে আসছে, এই ভাইরাস কৃত্রিমভাবে চীনের গবেষণাগারে প্রস্তুত করা হয়েছে এবং ‘দুর্ঘটনাবশত’ সেটি গবেষণাগারের বাইরে চলে এসেছে। তবে চীন বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলে আসছে, প্রাণীদেহ থেকেই মানবদেহে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস।
তবে মহমারি শুরু হওয়ার পর থেকে ত্বরিৎগতিতে একাধিক দীর্ঘমেয়াদী লকডাউনসহ কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে চীন এবং এখনো তার ধারাবাহিকতা চলছে। এ কারণে বিপুল জনসংখ্যা ও জনঘণত্ব থাকলেও অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় দেশটিতে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আছে করোনা পরিস্থিতি।
যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত ওয়েবসাইট করোনাভাইরাস ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, মহামারির শুরু থেকে এ পর্যন্ত চীনে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯০ হাজার ৩০৫ জন এবং মারা গেছেন ৪ হাজার ৬৩৬ জন।
সূত্র: রয়টার্স
এসএমডব্লিউ