ফাইল ছবি

রাশিয়ার সেনাদের গড়া প্রতিরোধ ব্যবস্থার সবচেয়ে শক্তিশালী ধাপটি ভেঙে ফেলেছে ইউক্রেনের সৈন্যরা। আর সেই ধাপটি ভেদ করে এখন সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে তারা। ইউক্রেনের সেনাদের দক্ষিণাঞ্চলের জাপোরিঝিয়ার দিকে নেতৃত্ব দেওয়া ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওলেক্সান্ডার তারানোস্ভকি এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য অবজারভারকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ওলেক্সান্ডার তারানোস্ভকি বলেছেন, রাশিয়া তাদের সেনাদের ঠেকাতে তিন ধাপে প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করেছিল। এরমধ্যে প্রথম ধাপে বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে মাইন পুঁতেছিল তারা। দ্বিতীয় ধাপে পরিখা খনন আর তৃতীয় ধাপে ড্রাগন টিথ (ট্যাংক প্রতিরোধী কংক্রিটের স্তূপ) স্থাপন করা হয়েছিল। এরমধ্যে প্রথম ধাপটি ভেঙে ফেলেছেন তার সেনারা।

তিনি আরও জানিয়েছেন, প্রথম ধাপ— অর্থাৎ মাইন পুঁততে রাশিয়া তাদের ৬০ শতাংশ সময় ও সম্পদ ব্যয় করেছিল। আর পরের দু’টি ধাপে যথাক্রমে ২০ শতাংশ সময় ব্যয় করেছিল। কারণ রাশিয়া চিন্তা করেনি, ইউক্রেনীয় বাহিনী তাদের প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রথম ধাপ ভেদ করতে পারবে।

আরও পড়ুন>>> ‘সেনারা এগিয়ে যাচ্ছে’, পাল্টা আক্রমণে সাফল্যের দাবি জেলেনস্কির

তিনি বলেছেন, ‘আমরা এখন প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপের মাঝামাঝি রয়েছি। আমাদের সেনারা এখন দুই দিক দিয়ে এগোচ্ছে এবং যেসব অঞ্চলে সাম্প্রতিক সময়ে সাফল্য পাওয়া গেছে সেসব অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ শক্তিশালী করছে।’

তিনি আরও বলেছেন, ‘পাল্টা আক্রমণে আমরা এখন শত্রুদের সেই ইউনিটক ধ্বংস করছি, যেটি প্রতিরোধ ব্যবস্থার দ্বিতীয় ধাপে থাকা রুশ সেনাদের নিরাপদ পশ্চাদপসরণের জন্য মোতায়েন আছে।’

বিস্তৃত অঞ্চলজুড়ে মাইন পোঁতায় পাল্টা আক্রমণ শুরুর কয়েক সপ্তাহ কোনো ধরনের সাফল্য পায়নি ইউক্রেন। তারা যখনই কোনো সাঁজোয়া যান বা অন্যান্য সামরিক যান নিয়ে প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কাছে যেত তখনই রুশ বাহিনী ড্রোন হামলা ও কামান থেকে গোলা ছুড়ত।

আর এ কারণে সময় নিয়ে পায়ে হেঁটে হেঁটে এবং জীবনের ঝুঁকি নিয়ে রাতের বেলায় এসব মাইন সরিয়েছেন ইউক্রেনের সেনারা। আর সেসব মাইন পরিষ্কার হয়ে যাওয়ায় এখন আবার যুদ্ধযান নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে তারা।

এ জেনারেল জানিয়েছেন, রাশিয়া এখন সেখানে আরও সেনাদের নিয়ে আসছে। তবে তিনি দাবি করেছেন, এ বিষয়টি ইউক্রেনের জন্যই ভালো হবে, কারণ তারা রাশিয়ার সেরা সেনাদের খতম করে দিতে পারবেন এবং দ্রুত সময়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন।

এদিকে দক্ষিণাঞ্চলে যে পাল্টা আক্রমণ ইউক্রেন চালাচ্ছে, সেটির লক্ষ্য হলো— রুশ বাহিনীকে প্রতিহত করে আজভ সাগর পর্যন্ত পৌঁছে যাওয়া এবং তাদে দুই ভাগে বিভক্ত করে ফেলা।

সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান

এমটিআই