বেঁচে থাকার চেতনা বিষাদ হয়েছে আফগান নারীদের। ছবি- দ্য গার্ডিয়ান।

আফগানিস্তানে তালেবান শাসনে থমকে গেছে দেশটির নারীদের জীবন। একে একে স্বপ্ন ভেঙে নিজেদের অস্তিত্বের খোঁজে তারা। দুবছরের শাসনামলে বন্ধ হয়েছে অনেক চলার পথ। শত ক্ষোভ-বিক্ষোভেও কোনো কাজ হলো না। এ থেকেই জন্ম নেয় হতাশা। স্বাধীনতার হস্তক্ষেপ, আশা হারানো, জোরপূর্বক ও অপ্রাপ্তবয়স্ত বিয়ে, শারীরিক নির্যাতন বৃদ্ধি—সব কিছুই বেঁচে থাকার চেতনাকে বিষাদে পরিণত করেছে। পরিশেষে অন্ধকার জগতের নৈরাজ্যে হতাশায় ‘প্রাণের মায়া ত্যাগ’ করছেন অনেক আফগান নারী। দ্য গার্ডিয়ান।

২০২১ সালে তালেবানরা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখলের পর থেকে দেশটিতে এক-তৃতীয়াংশ প্রদেশজুড়ে সরকারি হাসপাতাল ও মানসিক স্বাস্থ্য ক্লিনিং থেকে সংগৃহীত তথ্যে দেখা যায়, নারীদের আত্মহত্যার সংখ্যা উদ্বেগজনকহারে বাড়ছে। 

চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তালেবান কর্তৃপক্ষ এসব আত্মহত্যার তথ্য প্রকাশ করতে বাধা দিচ্ছেন। 

তবে স্বাস্থ্যকর্মীরা জনস্বাস্থ্য সংকটের ভয়াল এই তথ্য তুলে ধরতে ২০২১ সালের আগস্ট থেকে ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত বছরের একটি পরিসংখ্যান ব্যক্তিগতভাবে তুলে ধরেন। এ তথ্য থেকে জানা যায়, আত্মহত্যার জন্য আফগান বিশ্বের খুব কম দেশের মধ্যে একটি হয়ে উঠেছে। যেখানে পুরুষদের থেকে বেশি নারীরা এ পথ বেছে নিচ্ছেন।

আরও পড়ুন: জাতীয় পার্কে নারীদের ঘুরতে যাওয়া নিষিদ্ধ করল আফগানিস্তান

এদিকে জাতিসংঘের কর্মকর্তারা ও মানবাধিকার কর্মীরাও আত্মহত্যার চেষ্টাকারী নারীদের সংখ্যা তীব্র বৃদ্ধির বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তারা এটিকে নারীর অস্তিত্বে তালেবানের বিধিনিষেদের সঙ্গে যুক্ত করেন। 

ইউএন উইমেন দেশ প্রতিনিধি অ্যালিসন ডেভিডিয়ান বলেন, আমরা এমন একটি মুহূর্ত দেখছি যেখানে ক্রমবর্ধমান সংখ্যক নারী ও মেয়েরা বর্তমান পরিস্থিতিতে বেঁচে থাকার চেয়ে মৃত্যুকে পছন্দনীয় বলে মনে করে।

স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীদের দেওয়া পরিসংখ্যান দেখা যায়, জরিপ করা ১১টি প্রদেশের মধ্যে ১০টিতেই নারীদের আত্মহত্যার হার বেশি। সীমান্ত পেরিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ায় মৃত্যুর পথ বেছে নেন অনেকে। অন্য প্রদেশগুলোতে আত্মহত্যা করা বা আত্মহত্যা চেষ্টার পর চিকিৎসারত নারী ও মেয়েদের সংখ্যা বেশি।

এমএসএ