আলোচিত তোশাখানা মামলায় পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের সাজায় স্থগিতাদেশ দেওয়ায় দেশটির সুপ্রিম কোর্ট এবং প্রধান বিচারপতি ওমর আতা বান্দিয়ালের প্রতি ব্যাপক ক্ষোভ জানিয়েছেন আরেক প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। তার অভিযোগ, প্রধান বিচারপতিকে খুশি রাখতেই সাজা স্থগিতের এই রায় দিয়েছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার এক টুইটবার্তায় সাজা স্থগিতের আদেশকে পাকিস্তানের বিচার বিভাগের ‘কালো অধ্যায়’ উল্লেখ করে পাকিস্তান মুসলিম লীগ-নওয়াজের (পিএমএলএন) এই শীর্ষ নেতা। প্রধান বিচারপতিকে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলেও অভিযুক্ত করেছেন তিনি।

টুইটবার্তায় তিনি বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি যে তার প্রিয় ব্যক্তিদের প্রতি সদয়, তা আরও একবার এটি প্রমাণিত হলো। রায়ে কী সিদ্ধান্ত আসবে— তা যদি রায় ঘোষণার আগেই সবাই জেনে যায়, তাহলে তা সত্যিই যে কোনো দেশের বিচার বিভাগের জন্য উদ্বেগজনক।’

নিজের বড় ভাই ও পিএমএলএনের চেয়ারম্যান নওয়াজ শরিফের ক্ষেত্রে পাকিস্তানের বিচার বিভাগ কোনো অনুকম্পা প্রদর্শন করে নি— অভিযোগ করে শেহবাজ বলেন, ‘নওয়াজ শরিফ শাস্তি কার্যকর করা হয়েছে কিনা— সেজন্য একজন বিচারককে মনিটরিং জাজ হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল। আর এখানে নিজের প্রিয় ব্যক্তিকে বাঁচাতে প্রধান বিচারপতি নিজেই ‘মনিটরিং জাজ’ সেজে বসে আছেন।’

‘আজকের এই রায় পাকিস্তানের ইতিহাসের একটি কালো অধ্যায় হিসেবে লেখা থাকবে। যে বিচার ব্যবস্থার দাঁড়িপাল্লা একদিকে ঝুঁকে পড়ে এবং ন্যায়বিচারকে দুর্বল করে, সেই বিচারব্যবস্থা গ্রহণযোগ্য নয়,’ টুইটে বলেন শেহবাজ।

প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে বিভিন্ন দেশের সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারি কর্মকর্তাদের কাছ থেকে প্রাপ্ত তোশাখানায় জমা দেওয়ার পর তা কম দামে কিনে বাইরে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগে ইমরান খানের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন।

তোশাখানা মামলা নামে পরিচিত সেই মামলায় দোষী সাব্যস্ত হয়ে সাজা হিসেবে তিন বছর কারাবাস, এক লাখ রুপি জরিমানা ও রাজনীতিতে ৫ বছরের নিষেধাজ্ঞা পেয়েছিলেন ইমরান খান, যিনি ২০১৮ সালের নির্বাচনে জিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ওয়ার পর মেয়াদ শেষ করতে পারার আগেই ২০২২ সালের এপ্রিলে বিরোধী এমপিদের অনাস্থা ভোটে ক্ষমতাচ্যুত হন।

ইমরান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন শেহবাজ শরীফ। প্রায় ১৬ মাস সরকার পরিচালনার পর সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতা মেনে গত ১২ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ার হোসেন কাক্কারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন তিনি। 

ইসলামাবাদের অতিরিক্ত জেলা ও সেশন আদালত গত ৫ আগস্ট শনিবার দুপুরে তোশাখানা মামলার রায় ঘোষণার পরপরই লাহোরের জামান পার্কের বাসভবন থেকে গ্রেপ্তার করা হয় ইমরানকে। পরে ওই দিন সন্ধ্যায় তাকে অ্যাটক কারাগারে নিয়ে যাওয়া হয়। তারপর থেকে এখনও অ্যাটক কারাগারেই আছেন তিনি।

বুধবার এক রায়ে অতিরিক্ত জেলা ও সেশন আদালতের দণ্ডাদেশ স্থগিত করেছেন ইসলামাবাদ হাইকোর্ট।

সূত্র : জিও নিউজ

এসএমডব্লিউ