মস্কোর ডোমোদেডোভো বিমানবন্দরের টার্মিনালের বাইরে হাঁটছেন যাত্রীরা। ছবিটি ২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল তোলা

রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে আবারও ড্রোন হামলার চেষ্টা হয়েছে। রাশিয়া দাবি করেছে, মস্কো অঞ্চলে ইউক্রেনীয় ড্রোনের হামলার চেষ্টা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে। তবে এই ঘটনায় মস্কোর চারটি প্রধান বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল ব্যাহত হয়।

অবশ্য সাময়িক অসুবিধার পরে বিমানবন্দরগুলোতে ফ্লাইট চলাচল আবারও স্বাভাবিক হয়। সোমবার (২১ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার মস্কো অঞ্চলে দু’টি ইউক্রেনীয় ড্রোনের হামলা ব্যর্থ করে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রাশিয়া। তবে এই ঘটনায় রাশিয়ার রাজধানীর চারটি বিমানবন্দরের কার্যক্রম সমস্যার মুখে পড়ে এবং মস্কো অভিমুখে আসা ও মস্কো থেকে বাইরে যাওয়ার জন্য নির্ধারিত প্রায় ৫০টি ফ্লাইটের চলাচল ব্যাহত হয়।

রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তারা রাজধানীর পশ্চিমে রুজস্কি জেলায় একটি ইউক্রেনীয় ড্রোন জ্যাম করে এবং পরে কাছাকাছি ইস্ট্রিনস্কি জেলায় আরেকটি ড্রোন ধ্বংস করে।

এদিকে ড্রোন হামলার চেষ্টার পর মস্কোর চারটি প্রধান বিমানবন্দরে - ভনুকোভো, ডোমোদেডোভো, শেরেমেতিয়েভো এবং ঝুকভস্কি - থেকে ফ্লাইটের আগমন এবং প্রস্থান সীমিত করা হয়। রাশিয়ান বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ রোসাভিয়েতসিয়া জানিয়েছে, এদিন ৪৫টি যাত্রীবাহী বিমান এবং দু’টি পণ্যবাহী বিমানের চলাচল ব্যাহত হয়।

রাশিয়ান কর্মকর্তারা বারবার সতর্ক করেছেন, মস্কোর ওপর দিয়ে উড়ন্ত সামরিক ড্রোন বড় ধরনের বিপর্যয় ঘটাতে পারে। মূলত মস্কো ও এর আশপাশের অঞ্চলের জনসংখ্যা প্রায় ২ কোটি ২০ লাখ।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। ইউক্রেনের সীমান্ত থেকে প্রায় ৫০০ কিমি (৩১০ মাইল) দূরে অবস্থিত মস্কো এবং এর আশপাশের শহরতলি চলতি বছর বেশ কয়েক দফায় ড্রোন হামলা শিকার হয়েছে। যদিও যুদ্ধ শুরুর পর থেকে মস্কো ও আশপাশের এলাকা খুব কমই ইউক্রেনীয় হামলার লক্ষ্যবস্তু হয়েছিল।

সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইউক্রেন সীমান্তের কাছে অবস্থিত রাশিয়ান শহরগুলোসহ ক্রেমলিনে ড্রোন হামলার ঘটনা ঘটেছে এবং সোমবারের এই হামলাটি সেটিরই সর্বশেষ উদাহরণ। রাশিয়া অবশ্য এই ধরনের হামলার জন্য বরাবরই ইউক্রেনকে দায়ী করে আসছে।

রয়টার্স বলছে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে রাশিয়ার রাজধানীতে ড্রোন হামলা ক্রমশ সাধারণ বিষয় হয়ে উঠেছে। রাশিয়ান জনগণের মধ্যে ড্রোন হামলা কী প্রভাব ফেলবে তা অবশ্য স্পষ্ট নয়। জনমত জরিপ ইঙ্গিত দেয়, ইউক্রেনে রাশিয়ান সামরিক অভিযানের প্রতি সমর্থন এখনও অনেক বেশি এবং এর হার প্রায় ৭৫ শতাংশ।

যদিও রাশিয়ায় এই জরিপ কতটা সঠিক তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে।

এছাড়া রাশিয়ান ভূখণ্ডে হামলার পেছনে কারা রয়েছে সে বিষয়ে ইউক্রেন সাধারণত মন্তব্য করে না। যদিও রাশিয়ায় যেকোনও হামলার বিষয়ে ইউক্রেনীয় কর্মকর্তারা প্রকাশ্যেই তাদের সন্তুষ্টি প্রকাশ করে থাকেন।

টিএম