দ. কোরিয়া-মার্কিন মহড়া শুরু, ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার তদারকিতে কিম
উত্তর কোরিয়া কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে এবং সেই পরীক্ষা তদারকি করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। পিয়ংইয়ংয়ের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ সোমবার (২১ আগস্ট) এই তথ্য জানিয়েছে।
অন্যদিকে দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র তাদের বার্ষিক সামরিক মহড়া শুরু করেছে। একে অপরের মিত্র এই দুই দেশের এই ধরনের সামরিক মহড়াকে অবশ্য যুদ্ধের মহড়া হিসাবে দেখে থাকে পিয়ংইয়ং। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উত্তর কোরিয়ার কৌশলগত ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা তদারকি করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। একটি যুদ্ধজাহাজ থেকে এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা নিরীক্ষণ বা তদারকির জন্য তিনি পূর্ব উপকূলে অবস্থানরত নৌবাহিনীর একটি নৌবহরও পরিদর্শন করেন।
অবশ্য কিমের এই সফরের কোনও তারিখ উল্লেখ করেনি দেশটির সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সি (কেসিএনএ)।
কেসিএনএ জানিয়েছে, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের লক্ষ্য ছিল ‘জাহাজের যুদ্ধের কার্যকারিতা এবং এর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য’ যাচাই করার পাশাপাশি ‘প্রকৃত যুদ্ধে আক্রমণ’ চালানোর জন্য নাবিকদের সক্ষমতা আরও বাড়ানো। আর তাই সফরের সময় জাহাজটিকে ‘উচ্চ গতিশীলতা ও কঠোর আঘাত করার শক্তি এবং আকস্মিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় লড়াইয়ের জন্য অবিরাম প্রস্তুতি’ বজায় রাখার ওপর জোর দেন কিম।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের লক্ষণগুলো শনাক্ত করেছে তারা। তবে কোনও ধরনের বিশদ বিবরণ ছাড়াই কেসিএনএ যেসব দাবি করেছে তা ‘অতিরিক্ত’ এবং ‘বাস্তবতা থেকে আলাদা’ বলেও উল্লেখ করেছে তারা।
রয়টার্স বলছে, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের এই ঘটনা এমন সময় ঘটল যখন দক্ষিণ কোরিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্র সোমবার উলচি ফ্রিডম শিল্ড সামার সামরিক মহড়া শুরু করেছে। মূলত উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক এবং ক্ষেপণাস্ত্র হুমকির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ও দক্ষিণ কোরিয়ার যৌথ সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য এই মহড়া চালানো হচ্ছে।
অবশ্য এই দুই মিত্র দেশের সামরিক মহড়াকে পারমাণবিক যুদ্ধের মহড়া হিসেবে আখ্যায়িত করে নিন্দা জানিয়েছে পিয়ংইয়ং।
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক বাহিনী বলেছে, চলতি বছরের এই মহড়া ‘সবচেয়ে বড় পরিসরে’ অনুষ্ঠিত হবে। এই মহড়ায় উভয় পক্ষের কয়েক হাজার সৈন্য, সেইসাথে জাতিসংঘ কমান্ডের কিছু সদস্য রাষ্ট্রও একত্রিত হবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল বলেছেন, সাইবার, সন্ত্রাস ও ড্রোন হামলা এবং উত্তর কোরিয়ার বিভ্রান্তিমূলক প্রচারাভিযানসহ চলমান এই পরিস্থিতির মধ্যে মহড়া পরিচালিত হবে।
দেশটির ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের এক বৈঠকে ইউন বলেন, ‘সত্যিকারের শান্তি শুধুমাত্র অপ্রতিরোধ্য শক্তির মাধ্যমেই অর্জন করা যায়, একতরফা ভিক্ষা বা শুভেচ্ছার মাধ্যমে নয়। উত্তর কোরিয়া পূর্বনির্ধারিত ভাবে পারমাণবিক হামলা এবং আক্রমণাত্মক যুদ্ধের প্রস্তুতির বিষয়ে কথা বলে আসছে। তবে সেই ধরনের যেকোনও উসকানির বিরুদ্ধে আমরা তাৎক্ষণিক এবং অপ্রতিরোধ্যভাবে প্রতিশোধ নেব।’
দক্ষিণ কোরিয়ার আইনপ্রণেতারা বলেছেন, উত্তর কোরিয়া একটি আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করতে পারে বা মিত্রদের মহড়া বা দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপানের গত সপ্তাহের শীর্ষ সম্মেলনের প্রতিবাদে অন্য কোনও সামরিক পদক্ষেপ নিতে পারে।
টিএম