প্রতীকি ছবি

যুক্তরাষ্ট্রের একদল সার্জন জানিয়েছেন, ‘ব্রেন ডেড’ এক ব্যক্তির দেহে শূকরের কিডনি প্রতিস্থাপন করার পর বড় সাফল্য পেয়েছেন তারা। এই সার্জনরা দেখতে পেয়েছেন, ওই ব্যক্তির দেহে প্রতিস্থাপিত শূকরের কিডনিটি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে স্বাভাবিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী কিডনির যে চাহিদা রয়েছে, সেটি মেটাতে এই সাফল্য বড় একটি অর্জন হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।

নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের ল্যানগন ট্রান্সপ্ল্যান্ট ইনস্টিটিউটের সার্জনরা বুধবার (১৬ আগস্ট) বলেছেন, মানবদেহে এটিই সবচেয়ে লম্বা সময় শূকরের কিডনি কাজ করার ঘটনা, যদিও যার দেহে এটি কাজ করেছে তিনি মৃত।

ইনস্টিটিউটের পরিচালক রবার্ট মোন্টগোমারি সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘একটি মানবদেহে আমাদের প্রতিস্থাপিত শূকরের কিডনি এক মাসেরও বেশি সময় ধরে কাজ করছে।’

তিনি জানিয়েছেন, এ ফলাফল ভবিষ্যতে জীবিত মানুষের মধ্যে শূকরের কিডনি স্থাপন ও গবেষণায় সহায়ক হবে। শূকরের কিডনিটি প্রতিস্থাপনের আগে মডিফাই করে একটি বিশেষ জিন ফেলে দেওয়া হয়েছিল, যেটি মানব দেহের ইমিউন সিস্টেমের জৈবিক অণু হামলা করে ধ্বংস করে দেয়।

এই সার্জনের প্রত্যাশা, অন্য প্রাণীর অঙ্গ মানবদেহে প্রতিস্থাপনে সাফল্য পাওয়ার বিষয়টি অনেক মানুষের জীবন বাঁচাবে— যারা অঙ্গ পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন।

আরও পড়ুন>>> কিডনি ভালো রাখতে যে কাজগুলো করবেন

বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে ১ লাখ ৩ হাজার মানুষের অঙ্গ প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন। যার মধ্যে ৮৮ হাজার জনেরই প্রয়োজন কিডনি। এই অঙ্গ পাওয়ার অপেক্ষা করতে করতেই অনেকের মৃত্যু হয়।

যে ব্যক্তির দেহে শূকরের কিডনিটি প্রতিস্থাপন করা হয়েছে তার নাম হলো মরিস মো মিলার। তিনি ৫৭ বছর বয়সে হঠাৎ করে মারা যান। পরবর্তীতে গবেষণার জন্য তার মৃতদেহ দান করেছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা।

গবেষকরা জানিয়েছেন, তাদের এ গবেষণা দ্বিতীয় মাসে পা দিয়েছে এবং এটির ওপর সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে।

যার দেহে এই গবেষণা চালানো হয়েছে ওই ব্যক্তির বোন বার্তাসংস্থা এপিকে বলেছেন, ‘আমি এটি নিয়ে সংগ্রাম করেছি। আমি মনে করি আমার ভাইও এটিই চাইত। তাই আমি আমার ভাইয়ের মরদেহ তাদের দিয়েছি। তার নাম চিকিৎসা বিজ্ঞানের বইয়ে থাকবে। এরমাধ্যমে সে চিরজীবন বেঁচে থাকবে।’

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছে তারা ছোট আকারে এবং বাঁছাইকৃত কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবকের দেহে শূকরের হার্ট এবং কিডনি প্রতিস্থাপনের অনুমতি দেবে কি না।

সূত্র: আল জাজিরা

এমটিআই