ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ও কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী বন্দরনগরী ওডেসায় বেশ কয়েকটি সমুদ্র সৈকত উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর প্রথমবারের মতো এসব সৈকত খুলে দেওয়া হলো।

যদিও ওই আগ্রাসন এখনও চলছে এবং ইউক্রেনের কৌশলগত এই নগরীটি প্রায়ই রুশ আক্রমণের শিকার হচ্ছে। শনিবার (১২ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ান আক্রমণ শুরুর পর ইউক্রেনের কৃষ্ণসাগর তীরবর্তী শহর ওডেসার বেশ কয়েকটি সৈকত প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিকভাবে সাঁতার কাটার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় কর্মকর্তারা শনিবার জানিয়েছেন। যদিও বিমান হামলার সতর্কতার সময় শহরের এসব সৈকতে গোসল করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ওডেসা হচ্ছে পূর্ব ইউরোপের এই দেশটির বৃহত্তম বন্দর এবং নৌ ঘাঁটি। ইউক্রেনীয় এই শহরটি বারবার রুশ ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে এবং গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে আক্রমণের পরে শহরের সমুদ্র এলাকা শত শত সামুদ্রিক মাইনে আচ্ছন্ন হয়ে পড়েছিল।

এছাড়া ওডেসা বন্দর কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ বন্দর। কৃষ্ণসাগর দিয়ে ইউক্রেনের শস্য রপ্তানির জন্য এই বন্দর খুবই গুরুত্বপূর্ণ জলপথ। যুদ্ধ চলাকালীন এই বন্দরের ওপর দফায় দফায় হামলা চালিয়েছে রাশিয়া।

আর এর মধ্যেই ওডেসার বেশ কয়েকটি সমুদ্র সৈকত উন্মুক্ত করে দেওয়া হলো। যদিও রুশ আগ্রসান শুরুর পর বাসিন্দাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এবং সৈকতে মাইন বিস্ফোরণের ঘটনার পরে সমুদ্র উপকূল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।

ওডেসার গভর্নর ওলেহ কিপার টেলিগ্রাম মেসেজিং অ্যাপে বলেছেন, সমুদ্র সৈকত খোলার সিদ্ধান্তটি শহরের বেসামরিক এবং সামরিক প্রশাসন যৌথভাবে নিয়েছে। তিনি বলেন, সৈকতগুলো সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।

অলেক্সান্ডার নামে একজন লাইফগার্ড এবং সাবেক ডুবুরি বলেছেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় সাঁতারুদের অগভীর পানিতে অবস্থানরত মাইনগুলোর মুখোমুখি হওয়া থেকে রক্ষা করতে দু’টি স্তম্ভের মধ্যে অ্যান্টি-মাইন নেট স্থাপন করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘নেট তাদেরকে থামিয়ে দেবে। এবং সেগুলো (মাইন) এমন আবহাওয়ার মধ্যেও উপকূল থেকে দৃশ্যমান হবে। ফলে এটি জরুরি কর্মীদের নজরে আসবে এবং তারা তখন বিষয়টি দেখবেন।’

অবশ্য যুদ্ধের মধ্যেও সাঁতার কাটা এবং সূর্যস্নানের জন্য সমুদ্র সৈকত খোলার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন অনেকে।

স্ভিতলানা নামে ওডেসা অঞ্চলের এক বাসিন্দা বলেন, ‘আমি সমুদ্র সৈকতে যাওয়ার এবং নোনা বাতাসে শ্বাস নেওয়ার স্বপ্ন দেখছি। আমরা এটিকে অনেক মিস করছি। কিন্তু নিরাপত্তাই আমাদের কাছে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’

টিএম