অর্থপাচার ও নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র
বাংলাদেশ থেকে বিদেশে অর্থপাচার নিয়ে বাংলাদেশি গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ ও এ বিষয়ে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রসঙ্গটি যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে উঠে এসেছে। একইসঙ্গে বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের দাবিতে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সামনে বিক্ষোভের বিষয়টিও ব্রিফিংয়ে আলোচিত হয়।
ওই ব্রিফিংয়ে বলা হয়েছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে হাতিয়ার হিসেবে নিষেধাজ্ঞা ব্যবহৃত হতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে চলমান মার্কিন নীতি অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৮ আগস্ট) মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার নিয়মিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন। যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তরের ওয়েবসাইটে ওই ব্রিফিংয়ের বিস্তারিত বক্তব্য তুলে ধরা হয়েছে।
আরও পড়ুন: নির্বাচন নিয়ে কথা বলা অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয়: যুক্তরাষ্ট্র
সংবাদ সম্মেলনে এক সাংবাদিক ম্যাথিউ মিলারের কাছে বাংলাদেশ থেকে অর্থপাচার এবং এই ধরনের দুর্নীতি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের চিন্তা করছে কিনা তা জানতে চান।
ওই সাংবাদিক বলেন, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের বৈশ্বিক দুর্নীতি দমন বিষয়ক সমন্বয়ক রিচার্ড নেফিউ সবেমাত্র বাংলাদেশে তার সফর শেষ করেছেন এবং সফরে তিনি বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করেছেন। তার এই সফরের সময় বাংলাদেশের গণমাধ্যমে বিপুল অংকের অর্থ বিদেশে পাচার করা নিয়ে চাঞ্চল্যকর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। অভিযুক্ত এক ব্যক্তি বিপুল অংকের অর্থ পাচার করে বিদেশে ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করেছেন। ব্যাপক দুর্নীতি এবং অর্থ পাচারের বিষয়ে স্টেটওয়াচ.নেট এবং ওসিসিআরপি একই ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের সঙ্গে রিচার্ড নেফিউয়ের বৈঠকের সময় তিনি ইঙ্গিত দেন, নিষেধাজ্ঞাকে তারা দুর্নীতির বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসাবে বিবেচনা করতে পারে। আমার প্রশ্ন হলো: যুক্তরাষ্ট্র সরকার কি নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে চায়, বিশেষ করে যারা দুর্নীতি ও অর্থ পাচারের সাথে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে?
জবাবে ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমি এর আগে ভিন্ন একটি দেশের সম্পর্কে একটি ভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে বলেছিলাম, নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগে আমরা কখনোই সেটি নিয়ে (নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হবে কিনা বা কার বিরুদ্ধে দেওয়া হবে) কথা বলি না। তবে সাধারণভাবে বলতে গেলে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের একটি হাতিয়ার হতে পারে নিষেধাজ্ঞা আরোপ।
আরও পড়ুন: সাইবার নিরাপত্তা আইন নিয়ে যা বলছে যুক্তরাষ্ট্র
তিনি আরও বলেন, (দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে) আমাদের কাছে অন্যান্য পদক্ষেপও রয়েছে, যেমন সম্পদ হিমায়িত করা বা আটকে দেওয়া এবং অংশীদার দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় তথ্য দেওয়া যাতে তারা মামলা করতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশকে তার সীমানার মধ্যে থাকা দুর্নীতিবাজদের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে নির্মূল করতে উৎসাহিত করছি আমরা।
এর আগে পৃথক এক প্রশ্নে এক সাংবাদিক জানতে চান, বাংলাদেশে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য আজ মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সামনে বিক্ষোভ হচ্ছে– সেখানে তারা যা করছে, সে বিষয়ে আপনার কোনও মন্তব্য আছে? এবং বাংলাদেশের পরিস্থিতি এখন সত্যিই, সত্যিই খারাপ। আর তারা বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবি করছে। এ বিষয়ে আপনার মন্তব্য কী?
জবাবে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র ম্যাথিউ মিলার বলেন, আমরা অনেকবার এই বিষয়টি স্পষ্ট করেছি। এই মঞ্চ থেকে আমি অনেকবার এই বিষয়ে স্পষ্ট কথা বলেছি। আমরা বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে সমর্থন করি। আমরা তা প্রকাশ্যেই স্পষ্ট করে বলেছি।
তিনি আরও বলেন, আমরা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে আলোচনার সময়ও এটি পরিষ্কার করে জানিয়ে দিয়েছি এবং বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনে আমাদের (যুক্তরাষ্ট্রের) চলমান নীতি অব্যাহত থাকবে।
টিএম