ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের গুরুগ্রাম শহরের নুহতে হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে গত সোমবার রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে এখন পর্যন্ত ৫ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি। এছাড়া জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে অসংখ্য দোকানপাট, বাড়ি-ঘর এবং গাড়ি।

হঠাৎ করে হরিয়ানায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও অশান্তি সৃষ্টির জন্য দায়ী করা হচ্ছে মনু মানেশর নামের এক উগ্রবাদী গোরক্ষককে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানিয়েছে, কথিত গোরক্ষক মনু মানেশরের একটি ভিডিওর মাধ্যমে উত্তেজনার সূত্রপাত হয়। তিনি ভিডিওতে, হরিয়ানার গুরুগ্রামের মুসলিম অধ্যুষিত নুহ বিভাগে হিন্দুদের একটি মিছিল আয়োজন ও সেখানে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেন। আর তার মিছিলে যোগ দেওয়ার ঘোষণা শুনে ক্ষিপ্ত হন সেখানকার মুসলিমরা। কারণ উগ্রবাদী মনু গত বছর দুইজন মুসলিম রাখালকে নিশংসভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছিলেন।

মনু মিছিলে যোগ দেওয়ার ঘোষণা দেওয়ার পর মুসলিমরা তাকে আটকানোর ঘোষণা দেন। তার কথা অনুযায়ী, সোমবার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সেই মিছিল শুরু করেন। এরপরই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। আর এই উত্তেজনা চূড়ান্ত রূপ নেয় মঙ্গলবার মধ্যরাতে। এদিন স্থানীয় এক মসজিদের ইমাম, হোমগার্ডের দুই সদস্য নিহত হন। এরপর বুধবার এ সংখ্যা বেড়ে পাঁচজনে দাঁড়ায়।

আরও পড়ুন>>> ভারতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় মুসলিম ধর্মগুরুসহ নিহত ৩

মঙ্গলবার রাতেও সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল। এ সময় হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ মুসলিমদের দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্য কেন্দ্র ও গাড়িতে আগুন দেন।

যে উগ্রবাদী মনুর জন্য এই রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বাধে সেই মনু অবশ্য মিছিলে যোগ দেননি।

নুহ বিভাগের এমএলএহ চৌধুরী আফতাব আহমেদ সংবাদমাধ্যম এনডিটিভিকে বলেছেন, প্রশাসনের ব্যর্থতার কারণে এত বড় ঘটনা ঘটে গেছে। তিনি জানিয়েছেন, প্রশাসনকে শুরুতেই এই মিছিল থামানোর জন্য অনুরোধ করেছিলেন তিনি। যদি শুরুতে এটি বন্ধ করে দেওয়া হতো তাহলে এত উত্তেজনা দেখা দিত না এবং রক্তপাতের ঘটনাও ঘটত না।

এনডিটিভি জানিয়েছে, গুরুগ্রাম ও নুহ বিভাগের স্থানীয় প্রশাসন হিন্দু ও মুসলিম প্রতিনিধিদের সঙ্গে মঙ্গলবার বৈঠক করেছিল। দুই পক্ষকেই তারা শান্তি বজায় রাখার আহ্বান জানিয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও গুরুগ্রামের পরিবেশ শান্ত হয়নি। বিশেষ করে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ লাঠিসোটা নিয়ে সেখানে অশান্তি সৃষ্টি করছে। তারা মুসলিমদের দোকানপাটে আগুন দিয়েছে।

বর্তমানে ওই বিভাগের বেশিরভাগ এলাকায় ইন্টারনেট সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছে।

তবে এখন পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে; কেন তারা প্রাথমিক অবস্থায় এটি থামায়নি এবং সংঘর্ষের মূলহোতা মনুকে গ্রেপ্তার করেনি।

সূত্র: এনডিটিভি

এমটিআই