গাজায় হামাসের বিরুদ্ধে হাজারো মানুষের বিক্ষোভ
ঘন ঘন লোডশেডিং, খাদ্য ও নিত্য ব্যবহার্য বিভিন্ন পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, এবং ক্রমবর্ধমান বেকারত্বের প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠী হামাসের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন সেখানকার হাজার হাজার মানুষ।
রোববার গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর খান ইউনিসসহ অন্যান্য এলাকায় হয়েছে এই বিক্ষোভ মিছিল। মিছিল শেষে কয়েক জন হামাসের পতাকা পোড়ানোর উদ্যোগও নিয়েছিলেন, কিন্তু পুলিশি বাধার কারণে ভেস্তে যায় সেই কর্মসূচি।
বিজ্ঞাপন
হামাসের পতাকা পোড়ানোর ভিডিওদৃশ্য ধারণের জন্য যারা মোবাইল ফোন বের করেছিলেন, তাদের ফোনও পুলিশ সদস্যরা ভেঙে ফেলেছেন বলে জানা গেছে।
মিছিল ছত্রভঙ্গ করে দেওয়ার পর মিছিলকারীরা আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়া শুরু করেন। কয়েকজন পুলিশ সদস্য তাতে আহতও হয়েছেন।
গাজার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলোর বরাত দিয়ে মার্কিন বার্তাসংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস জানিয়েছে, রোববারের এই বিক্ষোভের প্রধান সংগঠক ছিল ‘আলভাইরাস আলসাখার’ (উপহাসকারী ভাইরাস) নামের একটি তৃণমূল অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট গ্রুপ। তবে এই গ্রুপের কোন কোন সদস্য সরাসরি এই কর্মসূচি আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত, তা এখনও জানা যায়নি।
১৯৮৭ সালে ইয়াসির আরাফাতের প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের (পিএলও) বিরোধিতায় জন্ম হয় ইসলামি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের। পিএলও বিরোধী শক্তি হিসেবে দাঁড় করাতে শুরুর দিকে ইসরায়েল সরকার হামাসকে অর্থ সহায়তা দিয়েছিল বলে দাবি করেন অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক। তবে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠায় ইসরায়েলের কোনো ধরনের ভূমিকার কথা বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে সংশ্লিষ্টরা।
২০০৭ সালে ফিলিস্তিনের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের দল ফাতাহকে উচ্ছেদ করে গাজা ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ নেয় হামাস। সশস্ত্র এই গোষ্ঠী ক্ষমতা নেওয়ার পর পরই ইসরায়েল ও মিশর এই ভূখণ্ডের ওপর কঠোর অবরোধ জারি করে।
গত ১৫ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা এই অবরোধে কার্যত পঙ্গু হয়ে পড়েছে হামাসের অর্থনীতি। বেকারত্ব, লোকশেডিং ও খাদ্যপণ্যের উর্ধ্বমমূল্যে নাভিশ্বাস উঠছে সাধারণ জনগণের। জুলাই মাসের এই প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও গড়ে মাত্র ৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাচ্ছেন গাজার বাসিন্দারা।
রোববারের মিছিলে বিক্ষোভকারীরা স্লোগান দিচ্ছিলেন, ‘কোথায় বিদ্যুৎ, কোথায় গ্যাস’, ‘কী লজ্জা,’ ‘কী লজ্জা’।
সূত্র : এপি
এসএমডব্লিউ