ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন প্রতিবাদ দেখালেন এক পুলিশ সদস্য। তার অভিযোগ, আমি চোর ধরি, আর আমার থানার কর্মকর্তারা অর্থ নিয়ে তাদের ছেড়ে দেয়। আর এই অভিযোগেই ব্যস্ত মহাসড়ক আটকে দিলেন তিনি।

শুধু তাই না, অবরোধ জারি রাখতে নিজেই শুয়ে পড়লেন রাস্তায়। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের জালন্ধরে। এই ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া বেশ কিছু ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতোমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে।

শনিবার (২২ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন প্রতিবাদ দেখাতে পাঞ্জাবের জালন্ধরের ভোগপুরে মহাসড়ক আটকে রাস্তায় শুয়ে পড়েন এক পুলিশ সদস্য।

তার দাবি, পুলিশের দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন তিনি। যাদেরই তিনি গ্রেপ্তার করে আনেন, থানার পুলিশ সদস্যরা ঘুষ খেয়ে তাদের ছেড়ে দেন। এর প্রতিবাদেই তিনি রাস্তায় শুয়ে প্রতিবাদ করছেন।

এদিকে রাস্তা আটকে ওই হোমগার্ড প্রতিবাদ করায়, হাইওয়েতে ব্যাপক যানজট সৃষ্টি হয়। অবশ্য দুর্নীতির অভিযোগ অস্বীকার করলেও ঘুষ নিয়ে আসামি ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ নিয়ে প্রবল অস্বস্তিতে পড়েছে ভারতীয় পাঞ্জাবের পুলিশ প্রশাসন।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ভোগপুরের পঠানকোট হাইওয়েতে দায়িত্বপালন করছিলেন ওই পুলিশ সদস্য। শনিবার দায়িত্বপালনের সময় তিনি মহাসড়ক আটকে আড়াআড়ি শুয়ে পড়েন রাস্তায়। তার আগে দড়ি দিয়ে রাস্তা আটকে দেন তিনি। এর ফলে বন্ধ হয়ে যায় মহাসড়ক।

দীর্ঘ হতে থাকে আটকে পড়া গাড়ির লাইন। সহকর্মীরাও তাকে রাস্তা থেকে ওঠাতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে তার এক সহকর্মী তাকে লাথি মেরে রাস্তা থেকে তোলার চেষ্টাও করেন। গোটা ঘটনাই রেকর্ড হয়েছে ক্যামেরায়। এরপরই তা ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। অবশ্য প্রতিবাদকারী ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে লাথি মারা হয়নি বলে দাবি করেছে পুলিশ বিভাগ।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, প্রকাশ্য দিবালোকে হোমগার্ড রাস্তায় শুয়ে বিক্ষোভ করছেন। এক পুলিশ সদস্য এসে তাকে সরানোর চেষ্টা করেন। এমনকি ওই হোমগার্ডকে এসময় লাথি মারতেও দেখা যায়। ওই হোমগার্ড বলেন, ‘আমি চোর ধরি আর আমার পুলিশ স্টেশনের অফিসাররা তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে অপরাধীদের ছেড়ে দেয়।’

সূত্রের বরাত দিয়ে সংবাদমাধ্যম বলছে, ওই হোমগার্ড একজনকে গ্রেপ্তার করেছিলেন। পরে গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিকে ভোগপুর থানায় নিয়ে যান তিনি। পরে আবার থানায় ফিরে সেই ব্যক্তিকে আর সেখানে দেখতে পাননি তিনি। জানতে পারেন, তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর এতেই ক্ষুব্ধ হন ওই পুলিশ সদস্য।

নিজের দায়িত্বের জায়গা পঠানকোট হাইওয়েতে ফিরেই রাস্তা আটকে শুয়ে পড়েন তিনি। তাকে সেখান থেকে সরানোর চেষ্টা করেছিলেন সহকর্মীরা। কিন্তু পারেননি। শেষ পর্যন্ত রাস্তা থেকে তাকে ওঠাতে এক সহকর্মীকে লাথি মারতেও দেখা যায়। তবুও ওঠানো যায়নি প্রতিবাদী পুলিশ সদস্যকে।

ভোগপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুখজিৎ সিং বলেন, ‘ঝগড়ার ঘটনায় এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছিলেন ওই হোমগার্ড। গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তি জামিনের আবেদন করলে থানা থেকেই তাকে জামিন দেওয়া হয়।’

এদিকে বিক্ষোভের সময় রাস্তা থেকে ওঠাতে প্রতিবাদী পুলিশ সদস্যকে সহকর্মী লাথি মারেননি বলে দাবি করেছেন ওই কর্মকর্তা।

টিএম