সন্ত্রাসী হামলা
চলতি বছর একদিনে সবচেয়ে বেশি সেনার মৃত্যু দেখল পাকিস্তান
পাকিস্তানে সন্ত্রাসী হামলায় দেশটির সামরিক বাহিনীর ১২ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। বুধবার (১২ জুলাই) দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় বেলুচিস্তান প্রদেশে পৃথক দুই হামলায় প্রাণ হারান তারা। সন্ত্রাসী হামলায় চলতি বছর এটিই দক্ষিণ এশিয়ার এই পরমাণু শক্তিধর দেশটিতে সর্বোচ্চ সংখ্যক সেনা মৃত্যুর ঘটনা।
এছাড়া পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর হামলায় সাত সশস্ত্র জঙ্গিও নিহত হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৩ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেলুচিস্তানের ঝোব এবং সুই এলাকায় পৃথক সামরিক অভিযানে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ১২ জন সৈন্য নিহত হয়েছেন। এছাড়া নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর হামলাকারী ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত সাত জঙ্গিও নিহত হয়েছে। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনসের (আইএসপিআর) একাধিক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
দ্য ডন বলছে, চলতি বছর হওয়া সন্ত্রাসী হামলাগুলোর মধ্যে বুধবারের এই হামলায় নিহতের ঘটনাটি ছিল একদিনে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সদস্যদের সর্বোচ্চ মৃত্যুর সংখ্যা। এর আগে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে বেলুচিস্তানের কেচ জেলায় হামলায় দেশটির ১০ সেনা সদস্য নিহত হয়েছিল।
বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, বুধবার পাকিস্তানের একটি সামরিক ঘাঁটিতে বন্দুক, হ্যান্ড গ্রেনেড এবং রকেট নিয়ে হামলা চালায় জঙ্গিরা। ওই হামলায় দেশটির নয়জন সৈন্য নিহত হয় বলে সেনাবাহিনী ও নিরাপত্তা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। সেখানে সেনা সদস্যদের পাল্টা হামলায় পাঁচজন জঙ্গিও প্রাণ হারায়।
এছাড়া পৃথক হামলার ঘটনায় বেলুচিস্তান প্রদেশের সুই জেলায় ভারী অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত ‘সন্ত্রাসীদের’ সাথে গুলি বিনিময়ে আরও তিনজন সৈন্য মারা গেছেন বলে সেনাবাহিনী জানিয়েছে। সেই গুলি বিনিময়ে দুই সন্ত্রাসী যোদ্ধাও নিহত হয়।
বুধবার গভীর রাতে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) জারি করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বেলুচিস্তান প্রদেশের সুই জেলার একটি এলাকায় অভিযান চলাকালে জঙ্গিদের আক্রমণের শিকার হয় নিরাপত্তা বাহিনী। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গুলি বিনিময়ের সময় তিন সাহসী সৈনিক এবং দুই সন্ত্রাসী প্রাণ হারান।
এর আগে একইদিন সকালে ঝোব ক্যান্টনমেন্টে একটি সামরিক স্থাপনায় হামলা হলে নয়জন সৈন্য এবং পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। সকালের সেই হামলার সময় কোয়েটাগামী একটি যাত্রীবাহী বাস ক্রসফায়ারের শিকার হয় এবং এক নারী প্রাণ হারান।
এছাড়া সেই ঘটনায় কমপক্ষে আরও পাঁচজন বেসামরিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
এদিকে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত সেনাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। রাষ্ট্র-পরিচালিত এপিপি জানিয়েছে, মাতৃভূমির জন্য নিহত সেনাদের আত্মত্যাগ চিরকাল স্মরণ করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এছাড়া বেলুচিস্তানের গভর্নর মালিক আবদুল ওয়ালি খান কাকার, মুখ্যমন্ত্রী মীর আবদুল কুদুস বিজেঞ্জো এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়াউল্লাহ ল্যাংগোও পৃথক বিবৃতিতে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন।
টিএম