পারস্য উপসাগরে ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর একটি নৌকা। ছবিটি ২০১৯ সালের ২২ আগস্ট তোলা

উপসাগর থেকে একটি বাণিজ্যিক জাহাজ আটক করেছে ইরান। আটককৃত ওই জাহাজটি সম্ভবত চোরাচালানের সাথে জড়িত ছিল এবং ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) উপসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে জোরপূর্বক সেটিকে জব্দ করে।

শুক্রবার (৭ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর মতে, ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনী (আইআরজিসি) উপসাগরের আন্তর্জাতিক জলসীমা থেকে একটি বাণিজ্যিক জাহাজ ‘জোরপূর্বক জব্দ করেছে’ যা সম্ভবত চোরাচালানের সাথে জড়িত ছিল।

বাহরাইনভিত্তিক মার্কিন নৌবাহিনীর পঞ্চম নৌবহর বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে বলেছে, তারা এই ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর ৫ম ফ্লিটের মুখপাত্র কমান্ডার টিম হকিন্স বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যের গুরুত্বপূর্ণ জলসীমায় বৈধ সামুদ্রিক নৌ চলাচলের অধিকার রক্ষার জন্য মার্কিন বাহিনী সজাগ এবং প্রস্তুত রয়েছে।’

অবশ্য এই ঘটনায় ইরান কোনো মন্তব্য করেনি।

ব্রিটিশ মেরিটাইম সিকিউরিটি কোম্পানি অ্যামব্রে বলেছে, তারা সৌদি আরবের বন্দরনগরীর দাম্মাম থেকে প্রায় ৫৯ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ১১০ কিলোমিটার) উত্তর-পূর্বে তানজানিয়ার-পতাকাবাহী ছোট একটি ট্যাংকারকে ইরানি বাহিনীর আটকের চেষ্টার বিষয়ে সজাগ ছিল।

কোম্পানিটি বলেছে, ‘তেল চোরাচালান করছে এমন সন্দেহে ইরান নিয়মিতই ছোট ট্যাংকার আটকিয়ে থাকে।’

বিশ্লেষক সংস্থা ভর্টেক্সার তথ্য অনুসারে, বিশ্বের সমুদ্রজাত অপরিশোধিত তেল এবং তেল পণ্য সরবরাহের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ হরমুজ প্রণালীর মধ্য দিয়ে পরিবহন করা হয়। মূলত হরমুজ প্রণালী ইরান এবং ওমানের মধ্যে একটি সংকীর্ণ এলাকা।

আল জাজিরা বলছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে উত্তেজনাপূর্ণ উপসাগরীয় জলপথে একাধিক ঘটনার জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরান একে অপরকে অভিযুক্ত করেছে। গত বুধবার মার্কিন নৌবাহিনী জানায়, তারা ওমান উপসাগরে দু’টি বাণিজ্যিক ট্যাংকার আটকে ইরানের প্রচেষ্টাকে ব্যর্থ করে দিতে হস্তক্ষেপ করেছে।

ইউএস নেভাল ফোর্সেস সেন্ট্রাল কমান্ড বুধবার বলেছে, তাদের ইউএসএস ম্যাকফাউল নামে গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী জাহাজ ওমান উপকূলে দু’টি তেল ট্যাংকারকে আটকানোর চেষ্টাকারী ইরানি জাহাজগুলোকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘটনায় ইরানি বাহিনী ট্যাংকারের দিকে গুলি চালায় বলেও জানা গেছে।

তবে ইরান বৃহস্পতিবার বলেছে, ইরানি জাহাজের সাথে সংঘর্ষের পর উপসাগরীয় এলাকা থেকে একটি ট্যাংকারকে আটক করার জন্য তাদের কাছে আদালতের আদেশ ছিল।

অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে হরমুজ প্রণালীতে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে হয়রানি ও জব্দ করার অভিযোগ করে আসছে। এছাড়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরান এই কার্যক্রম জোরদার করেছে এবং গত এপ্রিল ও মে মাসে দু’টি তেল ট্যাংকার আটক করে।

মার্কিন নৌবাহিনী বলেছে, বাণিজ্যিক জাহাজ জব্দ করতে ইরানের প্রচেষ্টার কারণে চলতি বছরের মে মাস থেকে হরমুজ প্রণালীতে তারা তাদের উপস্থিতি বাড়িয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইরান ২০২১ সাল থেকে এই ধরনের প্রায় ২০টি জাহাজ ‘আক্রমণ বা জব্দ করেছে’।

টিএম