দু’টি তেল ট্যাংকার আটকে ইরানের প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। বুধবার (৫ জুলাই) হরমুজ প্রণালীর কাছে দু’টি ট্যাংকার আটকে ইরানি বাহিনী চেষ্টা চালালেও মার্কিন নৌবাহিনী বাধা দেওয়ায় শেষ পর্যন্ত তা ব্যর্থ হয়ে যায়।

মূলত মার্কিন নৌবাহিনীর ডেস্ট্রয়ার পৌঁছানোর পরই সেখান থেকে সরে পড়ে ইরানি বাহিনী। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হরমুজ প্রণালীর কাছে দু’টি তেল ট্যাংকার আটক করতে ইরানি বাহিনীকে বাধা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন নৌবাহিনী।

ইউএস নেভাল ফোর্সেস সেন্ট্রাল কমান্ড বুধবার বলেছে, তাদের ইউএসএস ম্যাকফাউল নামে গাইডেড ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংসকারী জাহাজ ওমান উপকূলে দু’টি তেল ট্যাংকারকে আটকানোর চেষ্টাকারী ইরানি জাহাজগুলোকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে একটি ঘটনায় ইরানি বাহিনী ট্যাংকারের দিকে গুলি চালায় বলেও জানা গেছে।

মার্কিন নৌবাহিনীর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বুধবার ওমান উপকূলে ইরানিরা একটি ঘটনায় গুলি চালানোর পর ইরানি নৌবাহিনীর দু’টি বাণিজ্যিক ট্যাংকার আটক করার চেষ্টা রুখে দেয় মার্কিন বাহিনী। এই দু’টি ঘটনাই আন্তর্জাতিক জলসীমায় ঘটেছে।’

যুক্তরাষ্ট্র দীর্ঘদিন ধরে ইরানের বিরুদ্ধে হরমুজ প্রণালীতে বাণিজ্যিক জাহাজগুলোকে হয়রানি ও জব্দ করার অভিযোগ করে আসছে। এছাড়া সাম্প্রতিক মাসগুলোতে ইরান এই কার্যক্রম জোরদার করেছে এবং গত এপ্রিল ও মে মাসে দু’টি তেল ট্যাংকার আটক করে।

আল জাজিরা বলছে, প্রথম ঘটনাটি ঘটে বুধবার স্থানীয় সময় রাত ১ টায়। সেসময় ইরানি বাহিনী মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের পতাকাবাহী তেল ট্যাংকার টিআরএফ মস-এর কাছে আসে। তবে মার্কিন জাহাজ ইউএসএস ম্যাকফাউল ঘটনাস্থলে পৌঁছলে ইরানি জাহাজটি চলে যায়।

এই ঘটনার প্রায় তিন ঘণ্টা পরে মার্কিন নৌবাহিনী জানায়, বাহামিয়ান-পতাকাবাহী তেল ট্যাংকার রিচমন্ড ভয়েজার কাছ থেকে বিপদে পড়ার কল পায় তারা। মূলত ওই ট্যাংকারটিকে ইরানি নৌবাহিনীর জাহাজ থামতে বলেছিল।

তবে মার্কিন জাহাজটি ঘটনাস্থলে যাওয়ার সময় ইরানি বাহিনী ট্যাংকার ভয়েজারের ওপর ‘ছোট অস্ত্র’ দিয়ে গুলি চালায়। অবশ্য এতে কোনও গুরুতর ক্ষতি বা প্রাণহানি ঘটেনি বলে মার্কিন নৌবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়েছে। একপর্যায়ে ইউএসএস ম্যাকফাউল সেখানে পৌঁছলে ইরানি বাহিনী চলে যায়।

মার্কিন নৌবাহিনী বলেছে, বাণিজ্যিক জাহাজ জব্দ করতে ইরানের প্রচেষ্টার কারণে চলতি বছরের মে মাস থেকে হরমুজ প্রণালীতে তারা তাদের উপস্থিতি বাড়িয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, ইরান ২০২১ সাল থেকে এই ধরনের প্রায় ২০টি জাহাজ ‘আক্রমণ বা জব্দ করেছে’।

ইউএস ভাইস অ্যাডমিরাল ব্র্যাড কুপার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই গুরুত্বপূর্ণ জলসীমায় নৌ চলাচলের অধিকার রক্ষার জন্য সজাগ এবং প্রস্তুত রয়েছি আমরা।’

অবশ্য এই ঘটনায় কোনো মন্তব্য করেনি ইরান।

টিএম