স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত অস্ত্রে ইরানি বিজ্ঞানীকে হত্যা
ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির স্থপতি হিসেবে পরিচিত দেশটির শীর্ষ বিজ্ঞানী মোহসেন ফখরিজাদেহ গুপ্তহত্যায় স্যাটেলাইট-নিয়ন্ত্রিত অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে বলে দাবি করেছে তেহরান। সোমবার দেশটির আধা-সরকারি সংবাদ সংস্থা মেহের নিউজ এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
গত ২৭ নভেম্বর রাজধানী তেহরানের উপকণ্ঠের এক মহাসড়কে প্রথমে বন্দুক হামলা, পরে গাড়ি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ইরানি এই পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করেন অজ্ঞাত ঘাতকরা।
বিজ্ঞাপন
ইরানের ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর উপ-কমান্ডার কমোডর আলী ফাদাভির বরাত দিয়ে মেহের নিউজ বলছে, আর্টিফিশিয়াল গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মোহসেন ফখরিজাদেহকে লক্ষ্য করে স্যাটেলাইট নিয়ন্ত্রিত মেশিন গান থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়।
গত দশদিনে ইরানি এই বিজ্ঞানী হত্যাকাণ্ড ঘিরে নানা ধরনের বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। এর আগে, দেশটির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ফখরিজাদেহর দেহরক্ষীদের সঙ্গে দুর্বৃত্তদের গোলাগুলি হয়েছিল। গোলাগুলির মাঝেই রিমোট নিয়ন্ত্রিত মেশিন গান থেকে গুলি ছোড়া হয়। পরে এক দুর্বৃত্ত বিস্ফোরক বোঝাই ট্রাক আক্রান্ত স্থানের কাছে বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। পরবর্তীতে এই দুর্বৃত্ত দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান।
ফাদভি বলেন, ফখরিজাদেহকে লক্ষ্য করে অন্তত ১৩ রাউন্ড গুলি বর্ষণ করা হয়। তাকে লক্ষ্য করে এমন নিখুঁতভাবে গুলি করা হয়েছে যে, একই গাড়িতে মাত্র কয়েক ইঞ্চি দূরে বসে থাকা তার স্ত্রী কোনও ধরনের জখম হননি। সেই সময় ইরানের এই পরমাণু বিজ্ঞানীর সঙ্গে ১১ জন দেহরক্ষী ছিলেন।
গত জানুয়ারিতে ইরাকে ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর অভিজাত শাখা কুদস ফোর্সের প্রধান ও মধ্যপ্রাচ্যে তেহরানের সামরিক শক্তির নেপথ্যের কারিগর কাশেম সোলেইমানি মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন। গত ১১ মাসের মধ্যে ইরানের উচ্চপদস্থ দ্বিতীয় কর্মকর্তা হিসেবে ফখরিজাদেহ গুপ্তহত্যার শিকার হলেন।
ফখরিজাদেহ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করছে তেহরান। ২০১০ সালের পর ইরানের মাটিতে পঞ্চম উচ্চ-পদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন এই পরমাণু বিজ্ঞানী।
তবে বিজ্ঞানী ফখরিজাদেহ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপারে কোনও মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। তবে ২০১৮ সালের এপ্রিলে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির ওপর এক পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশনে ফখরিজাদেহর ছবি দেখিয়ে নাম স্মরণ রাখতে বলেছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু।
সূত্র : ব্লুমবার্গ।
এসএস