যুক্তরাষ্ট্রকে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিয়েছে উত্তর কোরিয়া। এছাড়া রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে গণসমাবেশও করেছে পূর্ব এশিয়ার এই দেশটি। সমাবেশে অংশ নেওয়া লোকেরা যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করার জন্য ‘প্রতিশোধের যুদ্ধের’ অঙ্গীকার করে স্লোগান দেন।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে সোমবার (২৬ জুন) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোরীয় যুদ্ধ শুরুর ৭৩তম বার্ষিকী উপলক্ষে পিয়ংইয়ংয়ে গণসমাবেশ করেছে উত্তর কোরিয়া। সেখানে লোকেরা যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করার জন্য ‘প্রতিশোধের যুদ্ধের’ স্লোগান দেন বলে সোমবার দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার সরকারি সংবাদমাধ্যম দ্য কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) জানিয়েছে, রোববার পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির রাজধানীজুড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার শ্রমজীবী ​​মানুষ এবং শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।

রয়টার্স বলছে, রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার প্রকাশিত ছবিগুলোতে পিয়ংইয়ংয়ের একটি স্টেডিয়ামে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড় দেখা গেছে। সমাবেশে অংশ নেওয়া এসব মানুষের হাতে প্ল্যাকার্ডও ছিল। যাতে লেখা ছিল, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সমগ্র ভূখণ্ড আমাদের শুটিং রেঞ্জের (গোলার আওতার) মধ্যে’ এবং ‘সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্র শান্তি ধ্বংসকারী।’

রোববারের এই বার্ষিকী এমন এক সময়ে উদযাপিত হলো যখন প্রথম প্রচেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর উত্তর কোরিয়া আবারও সামরিক গুপ্তচর উপগ্রহের উৎক্ষেপণ করতে পারে বলে উদ্বেগ রয়েছে। এর আগে গত ৩১ মে মার্কিন সামরিক কার্যকলাপের ওপর নজরদারি বাড়াতে নিজেদের প্রথম গুপ্তচর উপগ্রহের উৎক্ষেপণ করে দেশটি।

তবে ‘মালিগিয়ং-১’ নামে পরিচিত সামরিক রিকনেসান্স স্যাটেলাইট বহনকারী চোল্লিমা-১ রকেটটি উৎক্ষেপণের পরপরই দুর্ঘটনার শিকার হয়ে সমুদ্রে বিধ্বস্ত হয়। সেই ঘটনার পর দেশটি এই ধরনের আরও স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠানোর প্রতিশ্রুতি ইতোমধ্যেই দিয়ে রেখেছে।

সোমবার কেসিএনএ বলেছে, উত্তর কোরিয়ার কাছে এখন ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র’ এবং ‘এই ভূখণ্ডের মানুষ শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অদম্য ইচ্ছা নিয়ে টগবগ করছে’।

রয়টার্স বলছে, পারমাণবিক অস্ত্রে সজ্জিত উত্তর কোরিয়া তার বৃহত্তম আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রসহ সাম্প্রতিক সময়ে বিভিন্ন অস্ত্রের পরীক্ষা করেছে। এর ফলে দক্ষিণ কোরিয়া এবং দক্ষিণের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্রের সাথে উত্তেজনা ব্যাপকভাবে বেড়েছে পিয়ংইয়ংয়ের।

এদিকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি পৃথক রিপোর্টে যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে এই অঞ্চলে কৌশলগত সম্পদ পাঠানোর অভিযোগ তুলে উত্তর কোরিয়া বলেছে, ‘পারমাণবিক যুদ্ধ শুরুর জন্য মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র।’

উত্তর ও দক্ষিণ কোরিয়া প্রযুক্তিগতভাবে এখনও যুদ্ধের মধ্যেই রয়ে গেছে। কারণ ১৯৫০-৫৩ সালের উভয় দেশের সেই সংঘাত কোনো চুক্তিতে নয় বরং যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে শেষ হয়েছিল।

টিএম