ডলার রিজার্ভে গুরুতর ঘাটতিতে ভুটান
হিমালয় পার্বত্য অঞ্চলের দেশ ভুটানের ডলারের রিজার্ভ আশঙ্কাজনক হারে কমে গেছে। দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক রয়্যাল মনিটারি অথরিটির (আরএমএ) বুধবার এক বিবৃতিতে আরএমএ জানিয়েছে, গত ২০২২ সালের জুন মাসে বিদেশি মুদ্রার যে রিজার্ভ ছিল, সে তুলনায় চলতি বছর তা নেমে এসেছে প্রায় অর্ধেকে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিবৃতির তথ্য অনুসারে, ২০২২ সালের জুন মাসে ১৩৩ কোটি ২০ লাখ ডলারের রিজার্ভ বা মজুত ছিল ভুটানের, যা দেশটির ১৫ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর জন্য যথেষ্ট।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু চলতি জুনে এই মজুত নেমে এসেছে ৮৩ কোটি ৩০ লাখ ডলারে।
সাধারণভাবে একটি দেশের অর্থনীতির ভারসাম্য রক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অন্তত তিন মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডলারের রিজার্ভ থাকতে হয়। সেই হিসেবে ভুটানের মজুত যা আছে— তাতে তিন থেকে চার মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে।
তবে হিমালয় পর্বতমালা এবং চীন ও ভারত— বৃহৎ দুই প্রতিবেশী পরিবেষ্টিত এই দেশটির সার্বিক উৎপাদন ব্যবস্থা অন্যান্য দেশের তুলনায় খানিকটা ভিন্ন। ভুটানের সংবিধান অনুসারে, সরকারকে অবশ্যই ন্যূনতম ১২ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো ডলারের রিজার্ভ রাখতে হবে।
বর্তমানে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের যে রিজার্ভ— তাতে কোনোভাবেই ১২ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব নয় সরকারের পক্ষে।
ভুটানের শীর্ষ শিক্ষা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়্যাল থিম্পু কলেজের অর্থনীতির অধ্যাক সঞ্জীব মেহতা রয়টার্সকে এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘ভুটানের জাতীয় অর্থনীতির পরিপ্রেক্ষিতে এটা নিশ্চিতভাবেই গুরুতর একটি পরিস্থিতি। মূলত ৩টি কারণে আজকের এ অবস্থায় পৌঁছেছে ভুটান— প্রতিবেশীদের সঙ্গে বাড়তে থাকা বাণিজ্য ঘাটতি, পর্যটন থেকে আয় ও প্রবাসী রেমিটেন্স কমে যাওয়া এবং বিদেশি বিনিয়োগের প্রবাহে মন্দাভাব।’
একদিকে চীন, অন্যদিকে ভারত পরিবেষ্টিত ভুটানের বেশ ছোট একটি দেশ—আয়তন ৩৮ হাজার ৩৯৪ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা মাত্র ৮ লাখ।
বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ বাড়াতে সম্প্রতি উদ্যোগ নিয়েছে দেশটির সরকার। প্রবাসী রেমিটেন্সের হার বাড়াতে দেশে রেমিটেন্স গ্রহীতাদের বোনাস ১ শতাংশ থেকে ২ শতাংশে উন্নীত করার ঘোষণা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক; তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন— এই পন্থা অনুসরণের মাধ্যমে স্বল্পমেয়াদে এই সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব নয়।
এসএমডব্লিউ