মালয়েশিয়ায় গৃহস্থালীর কাজে নিয়োজিত প্রায় এক তৃতীয়াংশ অভিবাসী শ্রমিক বাধ্যতামূলক শ্রম পরিস্থিতিতে কাজ করছেন। জাতিসংঘের শ্রম সংস্থার প্রকাশিত এক সমীক্ষার ফলাফলে এই তথ্য উঠে এসেছে বলে বৃহস্পতিবার জানিয়েছে রয়টার্স।

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) বাধ্যতামূলক শ্রমের সূচকগুলোর মধ্যে অত্যধিক কর্মঘণ্টা, অবৈতনিক ওভারটাইম, কম মজুরি, সীমিত চলাচল এবং চাকরি ছাড়তে না পারার মতো বিষয়কে ভিত্তি ধরে এই সমীক্ষা পরিচালনা করেছে।

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির এক হাজার ২০১ জন গৃহকর্মীর সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে এই সমীক্ষার ফল তৈরি করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, মালয়েশিয়ায় প্রায় ২৯ শতাংশ অভিবাসী শ্রমিক এই ধরনের পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। আর দেশটির প্রতিবেশি সিঙ্গাপুর ও থাইল্যান্ডে এই হার যথাক্রমে ৭ ও ৪ শতাংশ।

সমীক্ষার ফলাফলের ব্যাপারে মন্তব্য জানতে চাইলেও মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর কোনও সাড়া দেয়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

থাইল্যান্ডের শ্রম মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ওয়ান্নারাত শ্রীসুকসাই বলেছেন, ২০১২ সালে অভিবাসী শ্রমিকদের অধিকারের সুরক্ষায় একটি আইন কার্যকর করার পর দেশটিতে নিয়োগকর্তাদের আচরণের উন্নতি ঘটেছে।

আইএলও বলেছে, ওই তিন দেশেই জরিপে অংশ নেওয়া গৃহকর্মীরা অন্যান্য শ্রমিকদের তুলনায় ‘অতিরিক্ত’ কাজ করেছেন এবং কেউই ন্যূনতম মজুরি পাননি।

এই গবেষণা কাজের প্রধান কারিগরি উপদেষ্টা আনা এংব্লম বলেছেন, ‘আমাদের সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর একটি গৃহস্থালীর কাজ। এখনও এই খাতের কর্মীরা সবচেয়ে কম সুরক্ষা পান। এটা আর মেনে নেওয়া হবে না।’

আন্তর্জাতিক এই শ্রম সংস্থা মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর এবং থাইল্যান্ডকে গৃহকর্মীদের অধিকার ও বাধ্যতামূলক শ্রমের বিষয়ে জাতিসংঘের কনভেনশন মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছে।

এশিয়ার বিভিন্ন দেশের অনেক পরিবারে প্রায়ই গৃহকর্মী নিয়োগ করা হয়ে থাকে। সাধারণত ইন্দোনেশিয়া, মিয়ানমার এবং ফিলিপাইনের মতো উন্নয়নশীল দেশগুলোর নারীদের এই কাজে নিয়োগ করা হয়। তারা রান্না, বাসা-বাড়ি পরিষ্কার, শিশুদের যত্ন এবং বাগান পরিষ্কারসহ গৃহস্থালির অন্যান্য কাজ করেন।

মালয়েশিয়ায় ইন্দোনেশীয় গৃহকর্মীদের নির্যাতনের শিকার হওয়ার একাধিক ঘটনা জানাজানির পর সম্প্রতি সমালোচনার মুখে পড়েছে দেশটি। একই সঙ্গে মালয়েশিয়ার বেশ কয়েকটি সংস্থার বিরুদ্ধে অভিবাসী শ্রমিকদের শোষণের অভিযোগও আনা হয়েছে।

আইএলওর তথ্য অনুযায়ী, মালয়েশিয়ায় প্রায় ৮০ শতাংশ গৃহকর্মী ইন্দোনেশীয় নাগরিক। গত বছর মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়া গৃহকর্মীদের সুরক্ষা ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করে।

এসএস