২৫ বছরের কৌশলগত চুক্তিতে ইরান ও চীন
কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইরান ও চীন। শনিবার (২৭ মার্চ) রাজধানী তেহরানে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ ও চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই ২৫ বছর মেয়াদি এই চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন।
এর আগে করোনা মহামারির মধ্যে শুক্রবার তেহরান সফরে যান চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী। চুক্তি সাক্ষরের আগে শনিবার দেশটির প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি এবং ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনির উপদেষ্টা ড. আলী লারিজানিসহ জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
ইরান ও চীনের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের সুবর্ণজয়ন্তীকে সামনে রেখে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ১৯৭১ সালে বেইজিং-এর সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে তেহরান।
এই চুক্তির ফলে চীন ও ইরানের দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতামূলক সম্পর্ক কৌশলগত অংশীদারিত্বে উন্নীত হলো। দ্বিপক্ষীয় এই চুক্তিতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের একটি পূর্ণাঙ্গ রোডম্যাপ রয়েছে। তবে অর্থনৈতিক সহযোগিতাই এই চুক্তির মূল বিষয়।
এছাড়া, এ চুক্তিতে চীনের বেল্ট এন্ড রোড পরিকল্পনায় ইরানের অংশগ্রহণের কথা বলা হয়েছে এবং বেসরকারি খাতের মধ্যে ব্যাপকভিত্তিক সহযোগিতা গড়ে তুলতেও দুই দেশ চুক্তিতে সম্মত হয়েছে।
এদিকে এই চুক্তির বিষয়ে ইরানের প্রেসিডেন্ট ড. হাসান রুহানি বলেছেন, চীনের সঙ্গে তার দেশের সম্পর্ক কৌশলগত ও গুরুত্বপূর্ণ। চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই’র সঙ্গে শনিবারের বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। রুহানি বলেন, দুই দেশই অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক অঙ্গনসহ সব ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদে সম্পর্ক ও সহযোগিতা জোরদারে আগ্রহী।
এ সময় আন্তর্জাতিক ফোরামে ইরানের অবস্থানের প্রতি চীনের সমর্থনের প্রশংসা করেন রুহানি বলেন, পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও দুই দেশের সহযোগিতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি করোনা মোকাবেলায় সহযোগিতার বাড়ানোর ওপর জোর দেন এবং চীন থেকে করোনার আরও টিকা আমদানির আগ্রহ প্রকাশ করেন।
এ সময় চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই বলেন, চীন সব সময় ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে গুরুত্ব দিয়েছে এবং মার্কিন নিষেধাজ্ঞার বিরোধিতা করে এসেছে। ইরানের বিরুদ্ধে আমেরিকার সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের নীতির সমালোচনা করে তিনি বলেন, আমেরিকার সর্বোচ্চ চাপ হচ্ছে একটি মানবতাবিরোধী পদক্ষেপ। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এর প্রতি সমর্থন নেই।
সম্প্রতি ইরানের মন্ত্রিসভা চীনের সঙ্গে ২৫ বছর মেয়াদি চুক্তির খসড়া অনুমোদন করে। এর আগে ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ইরান সফরের সময় কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাব দেন। এরপর দুই দেশই বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক আলোচনা করে চুক্তি স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে।
টিএম