চীনের সঙ্গে সংঘাত-সংঘর্ষ চায় না যুক্তরাষ্ট্র: বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটোতে সুইডেনকে শিগগিরই দেখা যাবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে সংঘাত চায় না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (১ জুন) ইউএস এয়ার ফোর্স অ্যাকাডেমিতে দেওয়া এক ভাষণে বাইডেন এই মন্তব্য করেন বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার কলোরাডো অঙ্গরাজ্যে ইউএস এয়ার ফোর্স অ্যাকাডেমির স্নাতকদের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। সেখানে তিনি ৯২১ জন গ্রাজুয়েট ক্যাডেটকে ডিপ্লোমা হস্তান্তর করেন।
অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে ডেমোক্র্যাটিক এই প্রেসিডেন্ট স্নাতকদের সতর্ক করে দেন। রাশিয়া এবং চীনের পক্ষ থেকে ক্রমবর্ধমান চ্যালেঞ্জগুলোকে উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, তারা ক্রমবর্ধমান অস্থিতিশীল বিশ্বে পরিষেবা দিতে প্রবেশ করতে চলেছে।
রয়টার্স বলছে, ইউএস এয়ার ফোর্স অ্যাকাডেমির স্নাতকদের ওই অনুষ্ঠানের মাঝেই একপর্যায়ে হোঁচট খেয়ে মঞ্চে পড়ে যান জো বাইডেন। এসময় বিমান বাহিনীর কর্মকর্তারাসহ অন্যরা বাইডেনকে সাহায্য করতে ছুটে যান। পরে তাকে উঠে দাঁড়াতে সহায়তা করেন তারা।
৮০ বছর বয়সী জো বাইডেন যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বয়স্ক প্রেসিডেন্ট এবং এই ঘটনায় তিনি অক্ষত আছেন বলেই জানানো হয়েছে। বিবিসি বলছে, ইউএস এয়ার ফোর্স অ্যাকাডেমির ৯২১ জন গ্রাজুয়েট ক্যাডেটের প্রত্যেকের সাথে করমর্দন করতে প্রায় দেড় ঘণ্টা দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এরই একপর্যায়ে ওই ঘটনা ঘটে।
এদিকে বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট বাইডেন স্পষ্ট করে বলেছেন, সম্পর্কের গভীর টানাপোড়েন সৃষ্টি হলেও চীনের দেওয়া চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পিছপা হবে না যুক্তরাষ্ট্র।
তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে সংঘাত বা সংঘর্ষ চায় না। চীন এবং যুক্তরাষ্ট্রকে একসাথে কাজ করতে সক্ষম হওয়া উচিত যেখানে আমরা জলবায়ুর মতো কিছু বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের সমাধান করতে পারি।’
একইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র নিজের এবং তার অংশীদারদের স্বার্থের পক্ষে অটল থাকবে জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমরা জোরালো প্রতিযোগিতার জন্য প্রস্তুত।’
রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধে ইউক্রেনের প্রতি মার্কিন সমর্থনের ওপরও এদিন জোর দেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন। তিনি বলেন, ‘ইউক্রেনের প্রতি আমেরিকান জনগণের সমর্থন কমবে না।’
এই অনুষ্ঠানেই সামরিক জোট ন্যাটোতে সুইডেনকে শিগগিরই দেখা যাবে বলে জানান বাইডেন। বৃহস্পতিবার নিজের প্রারম্ভিক বক্তৃতায় তিনি বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ইউক্রেনে আগ্রাসনের মাধ্যমে জোট ভাঙার চেষ্টা সত্ত্বেও ন্যাটো শক্তিশালী।
প্রেসিডেন্ট বাইডেন বলেন, ন্যাটো জোটে সম্প্রতি ফিনল্যান্ড যোগ দেওয়ায় এটি আরও শক্তিশালী হয়েছে, ‘এবং শিগগিরই সুইডেনও যোগ দেবে’। বিস্তারিত কিছু উল্লেখ না করে তিনি বলেন, ‘এটি ঘটবে (সুইডেন ন্যাটোতে যোগ দেবে), আমি আপনাকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।’
এর আগে নির্বাচনে আবারও জয়লাভ করায় গত সোমবার তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানকে ফোন করে অভিনন্দন জানান জো বাইডেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ফোনালাপে যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে অত্যাধুনিক এফ-১৬ যুদ্ধবিমান কেনার ইস্যুটি সামনে আনেন এরদোয়ান।
জবাবে সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে তুরস্কের আপত্তি প্রত্যাহারের শর্ত দেন বাইডেন। তিনি বলেন, ওয়াশিংটন চায় আঙ্কারা সুইডেনের ন্যাটোতে যোগদানের বিষয়ে তার আপত্তি প্রত্যাহার করুক।
গত সোমবার বাইডেন বলেছিলেন, তিনি এ বিষয়ে শিগগিরই প্রেসিডেন্ট এরদোয়ার সাথে আবার কথা বলবেন। আগামী জুলাই মাসে লিথুয়ানিয়ার ভিলনিয়াসে ন্যাটোর বার্ষিক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
এছাড়া গত মঙ্গলবার মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন তুরস্ককে অবিলম্বে ন্যাটোতে সুইডেনের যোগদানকে চূড়ান্ত করার আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশটি ইতোমধ্যেই সদস্যপদ নিয়ে আঙ্কারার আপত্তি মোকাবিলায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে।
টিএম