সন্ত্রাসীদের টার্গেটে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, মরিয়ম নওয়াজ
পাকিস্তানের নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন তালিবান নতুন একটি হামলা তালিকা বা হিট লিস্ট প্রস্তুত করেছে। আর সেই তালিকা ধরেই দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং পিএমএল-এন ভাইস প্রেসিডেন্ট মরিয়ম নওয়াজসহ শীর্ষস্থানীয় সামরিক ও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের হামলার লক্ষ্যবস্তু করার পরিকল্পনা করছে তারা।
পাকিস্তানি মিডিয়ার বরাত দিয়ে শনিবার (২১ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) এবং এর সহযোগী জামাত-উল-আহরার (জেইউএ)-এর প্রস্তুত করা নতুন তালিকায় আরও বেশ কয়েকজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তাও রয়েছেন বলে দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল শুক্রবার জানিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ডানপন্থি ধর্মীয়-রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীর প্রধান সিরাজুল হক বেলুচিস্তান প্রদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে আত্মঘাতী বোমা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়ার একদিন পরই এই তালিকাটি প্রকাশিত হয়েছে।
দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনালের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ এবং পিএমএল-এন সিনিয়র সহ-সভাপতি মরিয়ম নওয়াজের নাম সন্ত্রাসী সংগঠন টিটিপি ও জেইউএ-এর ‘হিট লিস্টে’ রয়েছে। এই দু’টি সংগঠন সশস্ত্র বাহিনীর নেতা, গোয়েন্দা সংস্থা এবং রাজনীতিবিদদের ওপর হামলা চালানোর পরিকল্পনা করছে।’
এমনকি সিনিয়র রাজনীতিবিদদের টার্গেট করা ছাড়াও দেশের সশস্ত্র বাহিনী এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থার চেকপোস্টগুলোতে ধারাবাহিক হামলার পরিকল্পনাও করছে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন টিটিপি। মিডিয়া রিপোর্ট অনুসারে, একটি সন্ত্রাসী গ্রুপ ইতোমধ্যেই জেইউএ নেতা রফিউল্লাহর তত্ত্বাবধানে পাঞ্জাবে প্রবেশ করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) পার্টির প্রধান ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার পর দেশব্যাপী দাঙ্গা-সহিংসতায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের প্রতি সমর্থন ঘোষণার পাশাপাশি তাদের প্রশংসা করেছেন টিটিপি কমান্ডার সর্বকাফ মোহমান্দ।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে অবশ্য পাকিস্তানে সন্ত্রাসবাদের ঘটনা বেড়েছে। তবে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনী সন্ত্রাসীদের পরাজিত করতে অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের প্রথম ত্রৈমাসিকে জঙ্গি হামলা এবং সন্ত্রাসবাদবিরোধী অভিযানে ৮৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত বা আহত হয়েছেন। ২০২২ সালের একই সময়সীমায় এই পরিসংখ্যান ছিল চলতি বছরের মোট হতাহত মানুষের অর্ধেক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাস ছিল গত এক দশকেরও বেশি সময়ে পাকিস্তানের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর জন্য সবচেয়ে মারাত্মক।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ‘নিরাপত্তা ও সরকারি কর্মকর্তাদের প্রাণহানিও বেড়ে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে নিহত নিরাপত্তা ও সরকারি কর্মকর্তাদের সংখ্যা ৮৮ জন হলেও চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৬৭ জনে।’
এছাড়া নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন টিটিপি গত জানুয়ারি-মার্চের মধ্যে কমপক্ষে ২২টি হামলা চালিয়েছে। যার ফলে মারা গেছেন কমপক্ষে ১০৭ জন।
টিএম