ইউরোপের দেশ যুক্তরাজ্যের যেসব মুসলিম পবিত্র হজ পালন করতে আগ্রহী— তাদের হয়ত এখন থেকে ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। যুক্তরাজ্যের মুসলিমদের জন্য হজের যে কোটা নির্ধারণ করা আছে, সেই সংখ্যা কমানোর কারণেই এমন শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই।

বর্তমানে হজে যাওয়ার জন্য সৌদি আরবের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় যে পদ্ধতি নির্ধারণ করেছে, সেখানে যুক্তরাজ্যের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে মাত্র ৩ হাজার ৬০০টি কোটা। করোনা মহামারির আগেও যা ছিল ২৫ হাজার। দেশটি থেকে প্রতি বছর অনেক মানুষ হজে যান। কিন্তু এখন যেহেতু সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাই অনেককে দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে হবে। 

তবে এ বছর যে ৩ হাজার ৬০০ ব্রিটিশকে হজের সুযোগ দেওয়া হয়েছে, তারাও শেষ পর্যন্ত আসতে পারবেন কিনা এ নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। যারা নতুন পদ্ধতি অনুযায়ী, কোটা বুক করা এবং অর্থ পরিশোধ করেছেন— তারা জানিয়েছেন এখনো তারা কোনো কনফারমেশন বা নিশ্চিতকরণ বার্তা পাননি।

এসব সমস্যা সমাধান ও হজের কোটার সংখ্যা ২৫ হাজারে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আগামী সপ্তাহে লন্ডনে সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন যুক্তরাজ্যের সংসদীয় কমিটির সদস্যরা।

যুক্তরাজ্যের হজ ও ওমরাহ বিষয়ক অল-পার্টি সংসদীয় কমিটি গত মঙ্গলবার একটি জরুরি বৈঠকে বসেন। তারা বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন।

সংসদের এ কমিটির চেয়ারম্যান লেবার এমপি ইয়াসমিন কোরেশি গত ফেব্রুয়ারিতে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন। সেখানে দেশটির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ছাড়াও প্রতিমন্ত্রী আব্দুলফাত্তাহ বিন সুলাইমান মাসাতের সঙ্গেও দেখা করেন তিনি।

কিন্তু তাদের বলা হয়, মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোর জন্য হজের কোটা বেশি রাখার যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সেটি বহাল থাকবে।

ইসলামের পাঁচটি ভিত্তির একটি হলো হজ। যারা আর্থিকভাবে সাবলম্বী তাদের জীবনে একবার হলেও হজে যেতেই হবে। কিন্তু এখন কোটা কমিয়ে দেওয়ায় অনেকে চাইলেও হজ পালনে যেতে পারবেন না। তাদের কমপক্ষে ৫ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারে।

হজে যেতে আগ্রহীরাও পড়ছেন বিড়ম্বনায়

যুক্তরাজ্যসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সাধারণ মানুষ আগে এজেন্সির মাধ্যমে হজে যেতেন। কিন্তু এ বছর থেকে তাদের নুসুক নামের একটি অ্যাপের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা করতে হচ্ছে। কিন্তু এ বিষয়টি নিয়েও অনেকে বিড়ম্বনায় পড়েছেন। তারা নিশ্চিত হতে পারছেন না হজের জন্য তাদের করা আবেদন গৃহীত এবং অনুমোদন পেয়েছে কিনা।

এসব বিষয় নিয়ে কথা বলতে সৌদির হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আরেকবার বৈঠক করবে যুক্তরাজ্যের সংসদীয় কমিটি।

সূত্র: দ্য মিডল ইস্ট আই

এমটিআই