আরব বিশ্বের ১৩টি দেশের ২৫ জন বিশেষজ্ঞ জ্যোতির্বিদ যৌথভাবে ঘোষণা দিয়েছেন, আজ (২০ এপ্রিল) আরব এবং ইসলামিক বিশ্বের কোথাও খালি চোখে পবিত্র ঈদুল ফিতরের চাঁদ দেখা যাবে না। বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের সংযুক্ত আরব আমিরাতের গবেষণা সংস্থা আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র (আইএসি)।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বর্তমানে চাঁদ দেখা যাওয়া ও দেখা না যাওয়া নিয়ে পরস্পরবিরোধী মত দেওয়া হচ্ছে এবং এ নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে বলে জ্যোতির্বিদদের এই দল স্বীকার করেছে।

এছাড়া কেন্দ্র বিবৃতিতে আবারও পরিষ্কার করে জানিয়েছে, ‘ঈদুল ফিতরের তারিখ ও দিন ঠিক করার জন্য এ বিবৃতি দেওয়া হয়নি। এই তারিখ নির্ধারণের জন্য আইনগত ও বৈজ্ঞানিক কিছু ভিত্তি আছে। আর তাদের বিবৃতি দেওয়ার কারণ হলো— চাঁদ দেখার বিষয়টি পরিষ্কার করা।’

আরও পড়ুন>>>মধ্যপ্রাচ্যে ঈদ শুক্রবার নাকি শনিবার?

তবে বিবৃতিতে ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে, সূর্যাস্তের পর নতুন চাঁদ আকাশে খুবই অল্প সময়ের জন্য থাকবে, যা চাঁদ দেখা যাওয়ার জন্য যথেষ্ট না। এছাড়া বায়মণ্ডলীয় অবস্থা, কক্ষপথে চাঁদের অবস্থান এবং চাঁদ সূর্যের অবস্থানের বিষয়টিও খালি চোখে চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিদ্যা কেন্দ্র বলছে, রমজান ও ঈদের চাঁদ দেখার কিছু মাণদণ্ড বা নির্ণায়ক রয়েছে। যেগুলো বিশ্বব্যাপী এখনও অনুসরণ করা হয় এবং চাঁদ ওঠার বিষয়টি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এটিই স্বীকৃত পন্থা।

আইএসি বলেছে, চাঁদ দেখার ক্ষেত্রে পুরোনো এবং নতুন যেসব মানদণ্ড রয়েছে, সেগুলো প্রয়োগ করলেও আজ আরব ও ইসলামিক বিশ্বে চাঁদ দেখা যাবে না। আর এ বিষয়টি শুধুমাত্র একজনের মতামত না। একটি বিশেষজ্ঞ দলের মতামত।

আরও পড়ুন>>>মধ্যপ্রাচ্য-বাংলাদেশে একসঙ্গে ঈদ? যা বলছে বিশ্লেষণ

এরপর দাঙ্গন লিমিট নামের একটি মানদণ্ডের কথা উল্লেখ করেছে আইএসি। যেটির মাধ্যমে চাঁদ থেকে সূর্যের দূরত্ব ও চাঁদের অবস্থান মরিমাপ করা হয়। সংস্থাটি বলেছে, বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) সূর্যাস্তের সময় ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা শহরে সূর্য থেকে চাঁদ ২ দশমিক ৭ ডিগ্রি, আবুধাবিতে ৪ দশমিক ৭ ডিগ্রি, মক্কায় ৫ দশমিক ১ ডিগ্রি দূরত্বে থাকবে। আন্তর্জাতিভাবে স্বীকৃত দাঙ্গন লিমিট হলো ৬ ডিগ্রি। ফলে এসব শহরে খালি চোখে এমনকি টেলিস্কোপ ব্যবহার করেও চাঁদ দেখা যাবে না।

তবে আজ রাতে আফ্রিকার দেশ সেনেগালের ডাকার শহরে চাঁদের অবস্থান সূর্য থেকে ৮ দশমিক শূন্য ডিগ্রি দূরে থাকবে। ফলে এখানে যন্ত্র ব্যবহার করে চাঁদ দেখা সম্ভব হবে।

সংস্থাটি তাদের উপসংহারে বলেছে, পৃথিবীর যেসব দেশ গাণিতিকভাবে সূর্যাস্তের পর চন্দ্রাস্তে সন্তুষ্ট বা চাঁদ দেখার প্রয়োজন মনে করে না এবং বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে চাঁদ দেখা নিয়ে সন্তুষ্ট, তাদের জন্য ২১ এপ্রিল শুক্রবার ঈদ উদযাপন ঠিক আছে।

কিন্তু যেসব দেশে শুধুমাত্র খালি চোখে অথবা এশিয়ায় যেসব দেশে শুধুমাত্র স্থানীয়ভাবে টেলিস্কোপের মাধ্যমে চাঁদ দেখার বিষয়টিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় বা বিধান রয়েছে, সেসব দেশে রোজা হবে ৩০টি এবং ঈদুল ফিতর উদযাপিত হবে শনিবার (২২ এপ্রিল)।

সূত্র: খালিজ টাইমস।

এমটিআই