বিক্ষুব্ধ সুদানে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করল জাতিসংঘ
ক্ষমতার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে সুদানে সেনাবাহিনী ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে সৃষ্ট সংঘাতের জেরে নিজেদের ৩ জন কর্মী নিহত হওয়ার পর পশ্চিম আফ্রিকার এ দেশটিতে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত করেছে জাতিসংঘভিত্তিক খাদ্য সহায়তা সংস্থা ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম (ডব্লিউএফপি)।
ডব্লিউএফপির শীর্ষ নির্বাহী পরিচালক সিন্ডি ম্যাককেইন রোববার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, ‘সুদানের সাধারণ লোকজন মারাত্মক খাদ্য নিরাপত্তাহীণতায় ভুগছেন এবং ডব্লিউএফপি তাদেরকে খাদ্য সহায়তা দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ; কিন্তু আমাদের টিম এবং অংশীদারদের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে এই সহায়তা কার্যক্রম আমরা চালিয়ে যেতে পারব না।’
বিজ্ঞাপন
‘এ কারণে সুদানের বর্তমান নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে আমলে নিয়ে আমরা সাময়িকভাবে দেশটিতে খাদ্য সহায়তা কার্যক্রম স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
২০২১ সালে অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হন সুদানের প্রেসিডেন্ট ওমর আল বশির, যিনি প্রায় ৩ দশক সুদানের ক্ষমতা আকড়ে ধরেছিলেন। দেশটির সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নেতৃত্বে ঘটে এই অভ্যুত্থান।
বশিরকে উৎখাতের পর ‘সভরিন কাউন্সিল (সার্বভৌম পরিষদ) নামের একটি পরিষদ দেশটি পরিচালনা করে আসছে। সেই পরিষদের প্রেসিডেন্ট সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহান এবং ভাইস প্রেসিডেন্ট আরএসএফের শীর্ষ নির্বাহী জেনারেল মোহাম্মদ হামদান দাগালু।
আরএসএফ-কে মূল সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার প্রক্রিয়া চলছে অনেক দিন ধরে। কিন্তু এই প্রক্রিয়া ১০ বছর বিলম্ব চায় আরএসএফ। সেনাবাহিনী দুই বছরের মধ্যেই এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়া উচিত বলে মনে করে।
সুদানে বেসামরিক শাসনে ফেরার প্রস্তাবিত পদক্ষেপের মূলে আছে আরএসএফ-কে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করার এ বিষয়টি। কিন্তু এর সময়সূচি নিয়ে দু,পক্ষের মধ্যে বিরোধের জেরেই শুরু হয়েছে সংঘাত।
সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যকার সংঘাতে সোমবার সুদানের দক্ষিন দারফুর প্রদেশের কাকাবিয়া অঞ্চলে ডব্লিউএফপির ৩ জন কর্মী নিহত হন, আহত হন আরও ২ জন।
রোববারের বিবৃতিতে ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের শীর্ষ নির্বাহী সিন্ডি ম্যাককেইন আরও বলেন, এই মুহূর্তে সুদানের উপদ্রুত এলাকাগুলোতে বিমান থেকেও খাদ্য সহায়তা প্রদান সম্ভব নয়, কারণ রাজধানী খার্তুমের বিমানবন্দরে শনিবার থেকে মুর্হুমূহ গুলি চলছে।
গত শনিবার থেকে সংঘাত শুরু হয় সুদানের সামরিক ও আধাসামরিক বাহিনীর মধ্যে। ইতোমধ্যে এই সংঘাতে প্রাণ হারিয়েছেন ৫৬ জন এবং আহত হয়েছেন আরও প্রায় ৬০০ জন।
এসএমডব্লিউ