মিয়ানমারের জান্তাবিরোধী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী পিপলস ডিফেন্স ফোর্সের (পিডিএফ) যে অনুষ্ঠানে বিমান হামলা চালিয়েছিল সামরিক বাহিনী, তাতে নিহতের সংখ্যা ১০০ ছাড়িয়েছে। এই নিহতদের মধ্যে অন্তত ১৬ জন শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্ক রয়েছে।

এদিকে, হামলার দিন মঙ্গলবার দেশটির ক্ষমতাসীন সামরিক সরকারের কোনো মুখপাত্র এ ব্যাপারে মন্তব্য না করলেও বুধবার এক মুখপাত্র করে বলেছেন, মিয়ানমার ও মিয়ানমারের জনগণকে ‘সন্ত্রাসীমুক্ত’ করতেই এ হামলা চালানো হয়েছিল।

মঙ্গলবার সকালে মিয়ানমারের মধ্যাঞ্চলীয় প্রদেশ সাগাইংয়ের পা জি গি গ্রামে নিজেদের আঞ্চলিক শাখঅ কার্যালয়ের আঙিনায় অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল পিডিএফ। অনুষ্ঠান শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পরই ওই স্থানে হামলা চালায় সামরিক বাহিনীর কয়েকটি যুদ্ধ বিমান।

ঘটনাস্থল থেকে কোনো রকমে জীবন রক্ষা করতে পারা এক প্রত্যক্ষদর্শী গ্রামবাসী বিবিসিকে বলেন, মূল অনুষ্ঠান বা সমাবেশস্থল ছিল পিডিএফে কার্যালয়ের হলরুম। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকাল ৭ টায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। তার কিছুক্ষণ পরই সামরিক বাহিনীর একটি যুদ্ধবিমান ওই হলরুমের ঠিক ওপর থেকে সরাসরি একটি বোমা ফেলে।

এই ঘটনার কয়েক মুহূর্তের মধ্যে সামরিক বাহিনীর কয়েকটি হেলিকপ্টার পিডিএফের কার্যালয় ও তার আশপাশে প্রায় ২০ মিনিট গুলিবর্ষণ করে।

হামলার পরে পা জি গি গ্রামের অনেক বাসিন্দা সেই অনুষ্ঠানস্থলের ভিডিওচিত্র সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন। সেসব পোস্টে দেখা যায়, খোলা জায়গায় বেশ কিছু ছিন্নভিন্ন মৃতদেহ পড়ে আছে এবং অনুষ্ঠানস্থল ও তার আশপাশের কয়েকটি ভবন জ্বলছে।

মৃতের গায়ে পিডিএফের ইউনিফর্ম থাকলেও অনেকের দেহে সাধারণ গ্রামবাসীর পোশাকও পরিলক্ষিত হয়েছে এসব ভিডিওচিত্রে।  

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিডিএফের এক সদস্য রয়টার্সকে বলেন, ‘শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছেন। অনেকের দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। আমরা মৃতদেহগুলোর শেষকৃত্য সম্পন্ন করেছি।’

বুধবার মিয়ানমারের জান্তা সরকারের মুখপাত্র জাউ মিন তুন সামরিক বাহিনীর টেলিভিশন চ্যানেল মায়াবতীতে মঙ্গলবারের হামলা সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘মঙ্গলবার সাগাইং প্রদেশের পা জি গি গ্রামে পিডিএফের আঞ্চলিক কার্যালয়ের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে সরকার অভিযান চালিয়েছে। আমাদের হাতে থাকা তথ্য অনুযায়ী, পিডিএফের অস্ত্রাগার লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়েছিল। কয়েক জন পিডিএফ সদস্য এবং তাদের প্রতি সহানুভূতিশীল বেসামরিক লোকজন এসময় নিহত হয়েছেন।’

‘এই অভিযান চালানো জরুরি ছিল; কারণ পিডিএফ মিয়ানমারের শত্রু, মিয়ানমারের জনগণের শত্রু।’

এসএমডব্লিউ