কানাডার সবচেয়ে জনবহুল দুই প্রদেশ কুইবেক ও অন্টারিওতে ব্যাপক এক তুষারঝড়ে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে এবং এখন পর্যন্ত বিদ্যুৎবিহীন আছেন প্রায় ১১ লাখ মানুষ। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল সেই ঝড়।

কুইবেক ও অন্টারিওতে প্রায় ৩ কোটি ৯০ লাখ মানুষের বাস। দেশটির মোট জনসংখ্যার অর্ধেকই থাকেন এই দু’ প্রদেশে।

গাছপালা উপড়ে যাওয়া, বিদ্যুতের লাইনে বরফ জমে যাওয়া এবং ঠান্ডার কারণে বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় এই বিপর্যয় দেখা গেছে। ১৯৯৮ সালের তুষারঝড়ের পর এটি কানাডায় সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের ঘটনা।

কুইবেক প্রাদেশিক সরকারের অর্থ ও জ্বালানিমন্ত্রী পিয়েরে ফিৎজগিবন শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ঝড়ে প্রাদেশিক রাজধানী মন্ট্রিয়াল লন্ডভন্ড হয়ে গেছে। তবে বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে।

ঝড় থেমে গেলেও স্থানীয় লোকজনকে জরুরি প্রয়োজন ব্যাতীত বাড়ির বাইরে বের না হওয়ার আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। যারা বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন, তাদেরকে ঝড়ের কারণে ছিড়ে পড়া বৈদ্যুতিক লাইন থেকে দূরে থাকা এবং যেসব এলাকায় গাছ-পালা বেশি— সেসব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বরফে ঢাকা গাছগুলোর যে কোনো সময় ধসে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে।

ঝড়ে যে দু’জন মারা গেছেন তাদের একজন কুইবেক, অপরজন অন্টারিও প্রদেশের। কানাডার সংবাদমাধ্যমগুলোর প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুজনেই মৃত্যু ঘটেছে মাথার ওপর গাছ ভেঙে পড়ার কারণে।

কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর অন্যতম সংসদীয় আসন মন্ট্রিয়াল। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘কুইবেক ও অন্টারিওর অধিকাংশ এলাকার লোকজন বর্তমানে যে খুবই কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তা আমরা অনুভব করতে পারছি। ঝড়ের যে ধ্বংসযজ্ঞ আমরা দেখেছি… গাছপালা উপড়ে ভবন ও গাড়ির ওপর পড়া, বিদ্যুতের তার ছিড়ে পড়া— এসব খুবই উদ্বেগজনক।’

‘বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। আশা করছি শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে।’

ঝড়ের পর কিছু দুই প্রদেশের কিছু এলকায় বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। তবে এখনও লাখ লাখ গ্রাহক বিদ্যুৎবিহীন আছেন কুইবেক ও অন্টারিওতে।

কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থানীয় সময় শুক্রবার মধ্যরাতের মধ্যে দুই প্রদেশের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা স্বাভাবিক হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

এসএমডব্লিউ