শীর্ষস্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে আটক করল পাকিস্তান
শীর্ষস্থানীয় এক বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে আটক করেছে পাকিস্তান। তার নাম গুলজার ইমাম ওরফে শাম্বে। তিনি একজন কট্টরপন্থি জঙ্গি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠী বেলুচ ন্যাশনাল আর্মির (বিএনএ) প্রতিষ্ঠাতা।
শুক্রবার (৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুলজার ইমাম ওরফে শাম্বেকে আটকের খবর নিশ্চিত করেছে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর ইন্টার সার্ভিস পাবলিক রিলেশনস (আইএসপিআর)। শুক্রবার তারা জানিয়েছে, কট্টর জঙ্গি এবং নিষিদ্ধ গোষ্ঠী বেলুচ ন্যাশনাল আর্মির (বিএনএ) প্রতিষ্ঠাতাকে আটক করা হয়েছে।
শাম্বেকে ‘উচ্চমূল্যের বা মূল্যবান লক্ষ্যবস্তু’ হিসেবে আখ্যায়িত করে আইএসপিআর জানিয়েছে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাজ করছে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সঙ্গে তার সম্পর্ক রয়েছে।
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর এই মিডিয়া উইং এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বিভিন্ন ভৌগোলিক অবস্থানে কয়েক মাসব্যাপী নজরে রাখার পর গুলজার ইমাম ওরফে শাম্বেকে উদ্ভাবনী পন্থায়, সতর্কতার সাথে পরিকল্পিত এবং সূক্ষ্মভাবে সম্পাদিত অভিযানের মাধ্যমে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
অবশ্য ঠিক কোন জায়গা থেকে বিচ্ছিন্নতাবাদী এই জঙ্গিকে আটক করা হয়েছে তা ওই বিবৃতিতে প্রকাশ করা হয়নি। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফের সভাপতিত্বে হাই-প্রোফাইল জাতীয় নিরাপত্তা কমিটির (এনএসসি) বৈঠকের দিনই শীর্ষ এই সন্ত্রাসীর আটকের খবর সামনে এলো।
দ্য ডন বলছে, গত কয়েক মাস ধরে পাকিস্তানের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে এবং সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো সারা দেশে প্রায় দায়মুক্তভাবেই হামলা চালাচ্ছে।
গত বছরের নভেম্বরে টিটিপির সাথে আলোচনা ভেঙ্গে যাওয়ার পর থেকে এই জঙ্গি গোষ্ঠীটি খাইবার পাখতুনখাওয়া এবং আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলে পুলিশকে লক্ষ্য করে আক্রমণ আরও জোরদার করে। এই সময়ে বেলুচিস্তানে বিদ্রোহীরাও তাদের সহিংস কর্মকাণ্ড জোরদার করেছে এবং টিটিপির সাথে সম্পর্ক স্থাপন করেছে।
ইসলামাবাদ-ভিত্তিক থিংক-ট্যাংক পাকিস্তান ইনস্টিটিউট ফর কনফ্লিক্ট অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ’র প্রকাশিত পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০১৮ সালের জুলাই মাসের পর থেকে ২০২৩ সালের জানুয়ারি মাসই ছিল সবচেয়ে রক্তাক্ত মাসগুলোর একটি। চলতি বছরের শুরুর এই মাসটিতে পাকিস্তানজুড়ে কমপক্ষে ৪৪টি জঙ্গি হামলায় ১৩৪ জন নিহত হন এবং আরও ২৫৪ জন আহত হন।
আইএসপিআরের বিবৃতি অনুসারে, ইমামকে ‘হাই প্রোফাইল এবং সফল গোয়েন্দা অভিযানে’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সামরিক বাহিনী বলেছে, বেলুচ রিপাবলিকান আর্মি (বিআরএ) এবং ইউনাইটেড বেলুচ আর্মি (ইউবিএ) একীভূত হয়ে বেলুচ ন্যাশনাল আর্মি (বিএনএ) প্রতিষ্ঠিত হয়।
আর গুলজার ইমাম একজন কট্টরপন্থি জঙ্গি এবং নিষিদ্ধ ঘোষিত বিএনএ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও নেতা। সামরিক বাহিনী আরও বলেছে, পাঞ্জগুর ও নোশকিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলাসহ পাকিস্তানে অসংখ্য সহিংস সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে বিএনএ।
পরমাণু শক্তিধর এই দেশটির সামরিক বাহিনীর বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আটককৃত জঙ্গি বেলুচ রাজি আজোই সাঙ্গার (বিআরএএস) তৈরিতে প্রধান ভূমিকা পালন করে এবং এর পরিচালনা প্রধান হিসাবেও কাজ করে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘গুলজার ইমাম ওরফে শাম্বে আফগানিস্তান এবং ভারত সফরও করেছেন বলে রেকর্ড রয়েছে এবং পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কাজ করছে এমন শত্রু গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর সাথে তার যোগসূত্র তদন্ত করা হচ্ছে।’
টিএম