মূল্যবৃদ্ধিতে চিড়ে চ্যাপ্টা পাকিস্তানিরা ঝুঁকছেন চোরাই পণ্যে
পাকিস্তানে নজিরবিহীন খাদ্য মূল্যস্ফীতি তৈরি হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যপণ্যের দাম আকাশচুম্বী হওয়ায় ব্যাপক সংকটের মুখোমুখি হয়েছেন দেশটির নাগরিকরা। দেশটিতে ইতোমধ্যে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ৪২ শতাংশে পৌঁছে গেছে। যে কারণে বিপুলসংখ্যক ভোক্তা রাওয়ালপিন্ডি এবং ইসলামাবাদে তেল ও পনিরের মতো সামান্য সস্তা কিন্তু ভালো মানের ইরানি পাচার পণ্য বেছে নিচ্ছেন।
দেশটির সংবাদমাধ্যম ডনের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ওই দুই শহরের অনেক দোকানে ইরানি পণ্য তাকে সাজিয়ে রাখা হয়েছে। দর কষাকষি করে কিছুটা সস্তায় এসব পণ্য কিনতে পারছেন ভোক্তারা।
বিজ্ঞাপন
রাওয়ালপিন্ডির সাপ্তাহিক বাজারে দোকান রয়েছে নেয়ামত খানের। তিনি আগে শুকনো ফল ও মশলা বিক্রি করতেন।এখন তার দোকানের একাংশে ইরানি জিনিসপত্র রয়েছে। নেয়ামত বলেন, লাভের পরিমাণ ভালো ছিল এবং ইরানি পণ্যের বিষয়ে কারও কোনও অভিযোগ নেই।
বাজারটিতে বেশ কিছু পণ্য পাওয়া যায়। ইরানি পণ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে রান্নার তেল এবং মাখনের। তবে এসব পণ্য ভোক্তারা খুব কমই পাচ্ছেন। কারণ বড় বড় বাণিজ্যিক ভোক্তারা সরাসরি পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে এসব পণ্য নিয়ে নিচ্ছেন।
বাজারে ইরানি পণ্যকে ভোক্তারাও আন্তরিকভাবে গ্রহণ করেছেন। ইরানের এসব খাদ্য সামগ্রীর প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন তারা। বাজারে নিখুঁত এবং মানসম্মত প্যাকেজিংয়ের কারণে ইরানি ‘পাচার’ পণ্যের চাহিদা বাড়ছে।
আসমত জেহরা নামের এক নারী ক্রেতা বলেন, ‘দেড় লিটার লাস্যির এই বোতলটি দেখুন... এটি কেবল অত্যন্ত ভাল প্যাকেজ করা হয়েছে তা নয়, বরং অন্য প্রতিটি পণ্যের মতো মেয়াদ শেষ হওয়ার তারিখও স্পষ্টভাবে স্ট্যাম্প করা হয়েছে।’
তিনি টমেটো পুরি এবং লাল মরিচের গুঁড়ার কথা উল্লেখ করে বলেন, যখন তাজা টমেটোর দাম বাড়ছে, তখন পরিবারের জন্য এই টমেটো এক ধরনের স্বস্তি বয়ে আনছে।
আমদানি করা ইরানি পণ্য-সামগ্রী প্যাকেজিং অত্যন্ত ভালো এবং এর মধ্যে কিছু পণ্য পাকিস্তানি পণ্যের তুলনায় ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সস্তা বলে দাবি করেন আসমত জেহরা। তবে প্রত্যেক দোকানদারের আলাদা বিক্রয় মূল্য রয়েছে, তাই দর কষাকষি করা জরুরি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আসমত জেহরা ইরানের বেশিরভাগ পণ্য আমদানি করা বললেও বিষয়টি আসলে তেমন নয়, বলছে ডন। ইরান এবং বেলুচিস্তানের পাশাপাশি আফগানিস্তানের উন্মুক্ত সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে ইরানি পণ্য চোরাচালান হচ্ছে বলে জানিয়েছে এই সংবাদমাধ্যম। সেসব পণ্যই পাকিস্তানের বাজারে তুলনামূলক সস্তায় বিক্রি হচ্ছে।
বেলুচিস্তান ছাড়াও, ইরানি সব পণ্য আগে কেবল লিয়ারিতে পাওয়া যেত। কিন্তু এখন ইসলামাবাদসহ দেশটির প্রায় সব শহরে ইরানি চোরাই পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।
এসএস