আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার চুক্তি করল যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা
আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য একটি চুক্তিতে পৌঁছেছে উত্তর আমেরিকার দুই দেশ যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডা। মূলত সরকারি স্বীকৃতি নেই বা অনুমোদনহীন সীমান্ত ক্রসিংগুলোতে পারাপারে ইচ্ছুক আশ্রয়প্রার্থীদের ফিরিয়ে দেবে দেশ দু’টি।
বেশ কয়েকটি মিডিয়া আউটলেটের বরাত দিয়ে শুক্রবার (২৪ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো শুক্রবার এই চুক্তির বিষয়ে ঘোষণা দেবেন বলে মার্কিন ও কানাডার মিডিয়া রিপোর্টে বলা হয়েছে।
বিবিসি বলছে, এই চুক্তির ফলে সীমান্তের উভয় পাশের কর্মকর্তারা এই ধরনের আশ্রয়প্রার্থীদের (কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে বা যুক্তরাষ্ট্র থেকে কানাডায়) প্রবেশের চেষ্টার সময় ফিরিয়ে দিতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া সম্প্রতি কানাডা থেকে যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী পারাপার বৃদ্ধি পেয়েছে।
মূলত যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য এবং কানাডার কুইবেক প্রদেশের মধ্যে অনুমোদনহীন বেসরকারী সীমান্ত ক্রসিং রক্সহাম রোডে অভিবাসীদের আগমন সীমিত করার প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে এই পদক্ষেপটি নেওয়া হয়েছে।
অবশ্য চুক্তির একটি অংশ হিসাবে দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকায় নিপীড়ন ও সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা ১৫ হাজার অভিবাসীর জন্য নতুন একটি শরণার্থী প্রোগ্রাম তৈরি করবে কানাডা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কর্মকর্তারা গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানিয়েছেন।
বিবিসি বলছে, কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডোর সঙ্গে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য এবং অভিবাসন সমস্যাগুলো সম্পর্কে সিরিজ আলোচনার জন্য ২৪ ঘণ্টার সফরে এখন কানাডার রাজধানী অটোয়াতে রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রে ফেরার আগে এই অভিবাসন চুক্তি ঘোষণা করার কথা রয়েছে তার।
মূলত এই চুক্তিটি উত্তর আমেরিকার এই দুই দেশের ২০০৪ সালের সেফ থার্ড কান্ট্রি এগ্রিমেন্ট নামক চুক্তির একটি সংশোধনী। ওই চুক্তি অনুসারে অভিবাসীদের প্রথম পৌঁছানো ‘নিরাপদ’ দেশে আশ্রয়ের দাবি করতে হবে, তা সেটি যুক্তরাষ্ট্র বা কানাডাই হোক না কেন।
তবে নতুন এই ব্যবস্থা সেফ থার্ড কান্ট্রি চুক্তির একটি ফাঁক বন্ধ করবে। যা মূলত অনানুষ্ঠানিক বা অনুমোদনহীন ক্রসিং পয়েন্টে সীমান্ত অতিক্রমকারীদের ফিরিয়ে দিতে কানাডাকে বাধা দেয়। আর এর ফলে রক্সহাম রোডের মতো জায়গা থেকে অভিবাসীদের কানাডায় প্রবেশ ঠেকাতে পারছিল না ট্রুডোর সরকার।
এছাড়া গত মাসে অভিবাসীদের যুক্তরাষ্ট্রের কানাডা সীমান্তে যাওয়ার জন্য বিনামূল্যে বাসের টিকিট দেওয়ার ঘোষণা দেয় নিউইয়র্ক সিটি কর্তৃপক্ষ।
বিবিসি বলছে, নতুন মার্কিন-কানাডা সীমান্ত চুক্তি নিয়ে আলোচনা কয়েক মাস ধরে স্থবির ছিল। মূলত যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো সীমান্তে নিজস্ব অভিবাসী সংকটে জর্জরিত মার্কিন প্রশাসন ও কর্মকর্তারা কানাডার সঙ্গে এই চুক্তিটি নিয়ে পুনরায় কাজ করতে চাননি।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, নতুন মার্কিন-কানাডা চুক্তি দ্রুত কার্যকর হতে পারে কারণ এর জন্য মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।
টিএম