দাবি ভারতীয় গণমাধ্যমে
উদ্বেগ সত্ত্বেও বাংলাদেশে রেলের কাজ পেতে চেষ্টা চালাচ্ছে চীন
বাংলাদেশে রেলওয়ে নেটওয়ার্কের উন্নয়নের কাজ পেতে বেশ জোরেশোরে লবিং করছে চীন। যদিও চীনা কোম্পানির প্রস্তাবিত উচ্চ ব্যয়ের বিষয়ে উদ্বেগ রয়েছে বাংলাদেশের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের ভেতরেই।
মূলত দেশে একই ধরনের অন্যান্য প্রকল্পের তুলনায় চীনা কোম্পানির প্রস্তাবিত উচ্চ ব্যয় নিয়ে ওই উদ্বেগ রয়েছে। বুধবার (২২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতের ইংরেজি সংবাদপত্র ইকোনমিক টাইমস।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আখাউড়া-সিলেট রেলপথের আপগ্রেডেশন প্রকল্পের জন্য বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বিকল্প তহবিল চাচ্ছে বলে জানতে পেরেছে ইকোনমিক টাইমস। কিন্তু ঢাকার উচ্চতর কর্তৃপক্ষের আশঙ্কা, বিকল্প অর্থের খোঁজ করার যে কোনও প্রচেষ্টা চীনের সাথে বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে এবং দেশে চীনের অর্থায়নকৃত অন্য প্রকল্পগুলো জন্য সমস্যা তৈরি করতে পারে।
ইকোনমিক টাইমস বলছে, আখাউড়া-সিলেট রেললাইন মিটারগেজ থেকে ডুয়েলগেজে উন্নীত করতে চীনের কাছে ১০ লাখ ৪ হাজার ৩৭ দশমিক ৮৯ মার্কিন ডলার ঋণ চেয়েছিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের মতে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২২৫ কিলোমিটার একক গেজ লাইনকে ২৩৯ কিলোমিটার ডুয়েল গেজ লাইনে রূপান্তর করার কথা রয়েছে।
ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমটি বলছে, চীনারা এই প্রকল্পটি জিটুজি (G2G) ভিত্তিতে বাস্তবায়নের জন্য লবিং করছে। কিন্তু বাংলাদেশের রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের মূল্যায়ন অনুযায়ী, চীনাদের প্রস্তাবিত প্রকল্প ব্যয়ের প্রাক্কলন বাংলাদেশে চলমান অন্যান্য প্রকল্পের তুলনায় অনেক বেশি।
সংবাদমাধ্যমটির দাবি, চায়না রেলওয়ে কনস্ট্রাকশন প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ব্যুরো গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড প্রকল্পের প্রস্তাবিত খরচের চেয়ে কম গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে এবং কোনও পরিবর্তন ছাড়াই প্রকল্পের মূল শর্তাবলী মেনে নেওয়ার জন্য ঢাকার কিছু কর্তৃপক্ষের সাথে জোর লবিং করছে।
অন্যদিকে সিলেট-আখাউড়া মিটারগেজ লাইনকে ব্রডগেজ লাইনে উন্নীত করতে তহবিল দেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ভারতও। মূলত বাংলাদেশের আখাউড়া অঞ্চলটি ভারতীয় সীমান্তের কাছে অবস্থিত। ভারতের আর্থিক সহায়তায় ১১০০ কোটি রুপিরও বেশি ব্যয়ে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ঐতিহাসিক আগরতলা-আখাউড়া রেল সংযোগ নির্মিত হচ্ছে।
ভারতীয় এই সংবাদমাধ্যমটির দাবি, প্রতিবেশী দেশ মিয়ানমারে চীন অর্থনৈতিকভাবে যথেষ্ট পরিমাণে প্রবেশ করেছে এবং বেইজিংয়ের প্রভাবও রয়েছে। এরপরও সেখানে ক্ষমতাসীন জান্তা কর্তৃপক্ষের আপত্তির কারণে চীনারা দেশটির বন্দর প্রকল্পের প্রস্তাব ৭৫ শতাংশ সংশোধন করতে বাধ্য হয়েছিল।
উল্লেখ্য, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের ২০১৬ সালের ঢাকা সফরের সময় জিটুজি ভিত্তিতে মোট ২৭টি অবকাঠামো প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য চীনের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ। সব মিলিয়ে চীন সরকার বাংলাদেশকে প্রকল্পগুলোর জন্য ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দেওয়ার আশ্বাস দেয়।
টিএম