ঐতিহাসিক সফরে রাশিয়ার রাজধানী মস্কোতে গেছেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। সেখানে তিনি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎও করেছেন। আর এর মধ্যেই প্রতিবেশী দেশ ইউক্রেন সফরে গেছেন জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা।

জাপানি প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকে ‘ঐতিহাসিক’ বলে অভিহিত করেছে ইউক্রেন। বুধবার (২২ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা এএফপি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা মঙ্গলবার ইউক্রেন সফরে যান এবং দেশটির রাজধানী কিয়েভের কাছে অবস্থিত বুচা শহর পরিদর্শন করেন। ইউক্রেনে আগ্রাসনের শুরুতে রাশিয়ান বাহিনী কিয়েভের উপকণ্ঠে অবস্থিত এই শহরেরই ব্যাপক নৃশংসতা চালিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

বুচা শহরের একজন এএফপি সাংবাদিক জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা সরকারি সফরের অংশ হিসাবে ইউক্রেনে এসেছেন এবং ইউক্রেনীয় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাথে প্রত্যাশিত বৈঠকের আগে মঙ্গলবার ওই শহরটিতে যান।

এএফপি বলছে, রাশিয়ান সৈন্যদের বিরুদ্ধে রাজধানী কিয়েভ অঞ্চলের শহরতলী বুচাতে বেসামরিক লোকদের গণহত্যা করার অভিযোগ রয়েছে। মূলত ২০২২ সালের শুরুতে বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে এই শহরটি রাশিয়া দখল করে রেখেছিল। আর সেই সময়ই ওই গণহত্যা সংঘটিত হয় বলে অভিযোগ রয়েছে।

অবশ্য বুচা শহরে যেকোনও ধরনের নৃশংসতা চালানোর অভিযোগ মস্কো বরাবরই অস্বীকার করে এসেছে।

অন্যদিকে ইউক্রেনের কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সফরের প্রশংসা করেছেন। টুইটারে এমিন ঝাপার নামে পরিচিত ইউক্রেনের জ্যেষ্ঠ উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী এমিন ঝাপারোভা বলেছেন, ‘এই ঐতিহাসিক সফরটি (ইউক্রেন ও জাপানের) মধ্যে সংহতি এবং দৃঢ় সহযোগিতার প্রতীক।’

কিয়েভের একটি ট্রেন প্ল্যাটফর্মে কিশিদার ছবি পোস্ট করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ভবিষ্যৎ বিজয়ে জাপানের দৃঢ় সমর্থন এবং অবদানের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।’

জাপানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সফরকালে কিশিদা ইউক্রেনের জনগনের সাহস ও ধৈর্যের প্রতি সম্মান জানাবেন; কারণ ইউক্রেনের মানুষ প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির নেতৃত্বে তাদের মাতৃভূমি রক্ষায় রুখে দাঁড়িয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি জাপানের প্রধান ও জি-৭ এর চেয়ারম্যান হিসেবে ইউক্রেনের প্রতি সংহতি ও অকুণ্ঠ সমর্থন প্রদর্শন করবেন।

এএফপি বলছে, বিশ্বের শিল্পোন্নত সাত দেশের জোট জি-৭ এর নেতাদের মধ্যে সর্বশেষ ব্যক্তি হিসেবে ইউক্রেন সফর করলেন ফুমিও কিশিদা। মূলত কিয়েভ সফরে যাওয়ার জন্য তিনি ক্রমবর্ধমান চাপের মধ্যে ছিলেন। কারণ চলতি বছরের মে মাসে জি-৭ শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করছে জাপান।

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং রাশিয়ার নেতা ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে আলোচনার জন্য মস্কো সফর করার সময় জাপানের প্রধানমন্ত্রীর এই সফরটি অনুষ্ঠিত হলো।

এছাড়া রাশিয়ার আগ্রাসন মোকাবিলায় কিয়েভকে সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপে পশ্চিমা মিত্রদের সাথে যোগ দিয়েছে জাপান।

টিএম