ইমরানের বাড়ির সামনে কন্টেইনার ফেলে পাহারায় সমর্থকরা
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে আটকের চেষ্টা নিয়ে নাটকীয়তা যেন কমছেই না। আদালতের হস্তক্ষেপে বুধবার গ্রেপ্তার অভিযান আপাতত স্থগিত হলেও পুলিশ আবারও লাহোরের মল রোডে জড়ো হতে শুরু করেছে।
ইমরানের বাসভবন জামান পার্ক থেকে এই মল রোড পাঁচ মিনিটেরও কম দূরত্বে অবস্থিত। অন্যদিকে জামান পার্কের প্রধান প্রবেশদ্বারের বাইরে শিপিং কন্টেনার ফেলে পাহারা দিচ্ছেন ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) সমর্থকরা।
বিজ্ঞাপন
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসলামাবাদ পুলিশ, পাঞ্জাব পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনী রেঞ্জার্স’র সদস্যরা ইমরানের বিরুদ্ধে জারি করা জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করার জন্য মঙ্গলবার থেকে চেষ্টা করলেও তারা পিটিআই কর্মীদের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে পড়েছে। ইমরান খান বর্তমানে তার লাহোরের বাসভবনে অবস্থান করছেন।
দ্য ডন বলছে, ইমরান খান এখন পর্যন্ত চারবার আদালতের শুনানি এড়িয়ে গেছেন। আর এরপর তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চালানো হলে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং ইমরানের সমর্থকদের মধ্যে সহিংসতার ঘটনা ঘটে। যদিও চলমান পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) ম্যাচের কারণে গ্রেপ্তারের অভিযান স্থগিত করা হয়েছে জানিয়ে বুধবার পিছু হটে পুলিশ।
এছাড়া পৃথকভাবে লাহোর হাইকোর্ট বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের অভিযান বন্ধ করতে নির্দেশ দেয়। এরপর থেকে জামান পার্কের পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে জামান পার্ক থেকে ডন ডটকমের প্রতিবেদক জানান, পিটিআইয়ের বেশ কয়েকজন কর্মী লাঠিসোঁটা ও গুলতি নিয়ে ক্যানাল রোডে জড়ো হয়েছেন। তারা কন্টেইনার নিয়ে ইমরানের বাসভবন অবরোধ করেছেন এবং দলীয় প্রধানের পক্ষে স্লোগান দিচ্ছেন।
এছাড়া পাকিস্তানের সাবেক এই প্রধানমন্ত্রীর সমর্থকরা জামান পার্কের দিকে যাওয়ার রাস্তার একাধিক অংশে পাথরও ফেলে রেখেছেন।
অন্যদিকে, ইমরানের বাসভবন থেকে মাত্র পাঁচ মিনিটের দূরত্বে অবস্থিত মল রোডে জড়ো হতে শুরু করেছে পুলিশ। ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, শিপিং কনটেইনারসহ একাধিক ট্রাক মল রোড ও ক্যানাল রোডের মোড়ে দাঁড়িয়ে আছে। ভিডিও ফুটেজে পাঞ্জাব পুলিশকেও দেখা যাচ্ছে।
এদিকে একাধিক টুইট বার্তায় ইমরানের দলের নেতা মুসাররাত জামশেদ চিমাকে উদ্ধৃত করে পিটিআই বলেছে, জামান পার্কের দিকে যাওয়ার রাস্তাগুলো অবরুদ্ধ করা হচ্ছে এবং পাঞ্জাবের প্রধান মহাসড়কগুলোতেও কন্টেইনার স্থাপন করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা তাদের সতর্ক করতে চাই, আমরা জাতির নেতাকে রক্ষা করব এবং আমরা পাকিস্তানের ভবিষ্যৎ কয়েকটি পরিবারের কাছে বন্দি হতে দেবো না।’
চিমা আরও দাবি করেছেন, লাহোর হাইকোর্ট পুলিশকে অভিযান পরিচালনা করতে বাধা দিয়েছে। কিন্তু এরপরও এই প্রশাসন যদি আদালতের আদেশ অমান্য করে, তাহলে তারা জনগণের মুখোমুখি হবে।
এদিকে ইসলামাবাদ পুলিশ জানিয়েছে, জামান পার্কে সংঘর্ষের সময় তাদের নয়জন কর্মকর্তা আহত হয়েছেন যার মধ্যে একজন এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তারা জানিয়েছে, ‘নিরস্ত্র পুলিশ অফিসারদের নির্যাতন এবং রাস্তা অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল।’
পুলিশ আদালতের আদেশ পালন করছে উল্লেখ করে আরও বলা হয়েছে, ‘ইসলামাবাদ ক্যাপিটাল পুলিশ পেশাদারভাবে তার দায়িত্ব পালন করেছে এবং দায়িত্বপালন চালিয়ে যাবে।’
টিএম