তৃতীয় লিঙ্গের লোকজনের যোগ দেওয়াকে ঘিরে ‍বাদানুবাদের জেরে নারী দিবসের মিছিলে লাঠিচার্জ করেছে পাকিস্তান পুলিশ। বুধবার দুপুরে রাজধানী ইসলামাবাদের প্রেসক্লাব এলাকায় ঘটেছে এ ঘটনা।

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শেরি রহমান এক টুইটবার্তায় নারী দিবসের মিছিলে পুলিশি হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। দোষী পুলিশ সদস্যদের চিহ্নিত ও আইনের আওতায় তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।

এক প্রতিবেদনে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম জিওটিভি জানিয়েছে, ৮ মার্চ নারী দিবস উপলক্ষ্যে বিভিন্ন নারী অধিকার সংগঠনের উদ্যোগে আয়োজন করা হয়েছিল ‘আওরত আজাদি মার্চ’ নামের এই মিছিলটি। ইসলামাবাদের প্রেসক্লাব এলাকায় মিছিলপূর্ব সমাবেশে যোগ দিয়েছিলেন দেশটির কেন্দ্রীয় সরকারের জলবায়ু বিষয়ক মন্ত্রী শেরি রহমানও। তবে সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে ওই এলাকা ছেড়ে চলে গিয়েছিলেন তিনি।

সমাবেশে নারীদের পাশপাশি যোগ দিয়েছিলেন উল্লেখযোগ্যসংখ্যক তৃতীয় লিঙ্গের লোকজনও। সমাবেশ শেষে মিছিল বের করার পর অল্প সময়ের মধ্যেই সেটি পুলিশি বাধার মুখে পড়ে। নারীদের মিছিলে তৃতীয় লিঙ্গের লোকজনদের উপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পুলিশ সদস্যরা।

এই ইস্যুকে ঘিরে নারীনেত্রীদের সঙ্গে পুলিশের কিছুক্ষণ বাদানুবাদ চলে; তার মধ্যেই আচমকা লাঠিচার্জ শুরু করেন পুলিশ সদস্যরা। এতে নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের লোকজনের পাশাপাশি আহত হন সংবাদ সংগ্রহ করতে আসা কয়েকজন সাংবাদিক ও ক্যামেরাম্যানও।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত সাংবাদিকরা জানিয়েছেন, নারীনেত্রীরা শান্তিপূর্ণভাবে পুলিশের সঙ্গে আলোচনা করছিলেন। পুলিশ বিনা উসকানিতে হামলা চালিয়েছে।

হামলার নিন্দা জানিয়েছে বুধবার সন্ধ্যায় এক টুইটে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শেরি রহমান বলেন, ‘আজকের ঘটনায় আওরত আজাদি লংমার্চের বন্ধুরা নিশ্চিতভাবেই মর্মাহত। একটি ছোট শান্তিপূর্ণ মিছিলে লাঠিচার্জ করার কোনো অধিকার ইসলামাবাদ পুলিশের নেই।’

মিছিলে হামলা চালানো পুলিশ সদস্যদের সবাই ছিলেন নারী। টুইটবার্তায় এ ব্যাপারটির দিকে ইঙ্গিত করে শেরি রহমান বলেন, ‘লাঠিধারী নারীদের পেছনের দিকে ঠেলে দেওয়া উচিত, প্রগতীশীলদের নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে এ ঘটনায় খুবই দুঃখ পেয়েছি এবং তদন্ত দাবি করছি।’

পাকিস্তানের মানবাধিকার কমিশন এইচআরসিপির এক টুইটবার্তায় বলা হয়েছে, ‘আওরাত আজাদি মার্চের মিছিলে হামলার ঘটনায় এইচআরসিপি গভীর শোক প্রকাশ করছে। আমরা আরও জানতে পেরেছি, ধর্মভিত্তিক দলগুলো মিছিলে নারীদের অংশগ্রহণ ঠেকাতে প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছিল। এটাও যথেষ্ট উদ্বেগজনক।’

‘আমরা বলতে চাই, যে কোনো ইস্যুতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের অধিকার পাকিস্তানের সব নাগরিকের আছে।’

এসএমডব্লিউ