শিক্ষিকা-ছাত্রীদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করল আজাদ কাশ্মির
মেয়ে শিক্ষার্থী ও শিক্ষিকাদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করেছে পাকিস্তানের আজাদ জম্মু ও কাশ্মির (এজেকে) সরকার। এখন থেকে ছেলে ও মেয়েরা একসঙ্গে শিক্ষাগ্রহণ করে এমন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের এই নিয়ম মেনে চলতে হবে।
সোমবার (৬ মার্চ) আজাদ কাশ্মিরের প্রাদেশিক শিক্ষা বিভাগ থেকে এই নির্দেশনা দেওয়ার বিষয়টি সামনে আসে বলে জানিয়েছে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম দ্য ডন এবং দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আজাদ জম্মু ও কাশ্মিরের শিক্ষা বিভাগ ছাত্র-ছাত্রীদের একসঙ্গে পড়ানো হয় এমন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মেয়ে শিক্ষার্থী এবং শিক্ষিকাদের হিজাব পরা বাধ্যতামূলক করেছে। একইসঙ্গে সোমবার সামনে আসা এক সার্কুলারে সমস্ত স্কুল ও কলেজের প্রশাসনকে এই নির্দেশনা অক্ষরে অক্ষরে বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছে আজাদ কাশ্মিরের প্রাদেশিক শিক্ষা বিভাগ।
দ্য নিউজ ইন্টারন্যাশনাল বলছে, কর্তৃপক্ষের জারি করা এই নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রধানের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে আজাদ কাশ্মির সরকার। তবে হিজাব পরিধান না করা ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে তা ওই পরিপত্রে স্পষ্ট করা হয়নি।
বাধ্যতামূলকভাবে হিজাব পরিধানের বিজ্ঞপ্তির পেছনে কারণ উল্লেখ করে শিক্ষা অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানরা কর্তৃপক্ষের জারি করা ড্রেস কোড বাস্তবায়ন করছেন না বলে দেখা যাচ্ছে।
অবশ্য সোমবারের আগে ড্রেস কোড ঠিক কী ছিল সে সম্পর্কে বিস্তারিত কোনও তথ্য জানাতে পারেননি শিক্ষা কর্মকর্তারা।
আজাদ কাশ্মিরের কর্মকর্তারা বিজ্ঞপ্তিটিকে অফিসের ‘অভ্যন্তরীণ বিষয়’ বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, শিক্ষাগত অন্তর্দৃষ্টিতে শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার জন্য এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।
এদিকে পাকিস্তানের আরেক সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের সাথে কথা বলার সময় আজাদ কাশ্মিরের শিক্ষামন্ত্রী দেওয়ান আলী খান চুঘতাই বলেছেন, বাধ্যতামূলকভাবে হিজাব পরিধানের বিষয়ে জারি করা এই বিজ্ঞপ্তিটি ‘আমাদের ধর্ম এবং আমাদের সমাজের নৈতিক মূল্যবোধ’ অনুসারে জারি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘এটি (হিজাব পরা) আল্লাহ এবং মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.)-এর আদেশ।’
ডন.কমকে তিনি বলেন, ‘আমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূল (সা.)-এর হুকুম যথাযথভাবে পালন করেছি (…)।’
চুঘতাই আরও বলেন, ‘এটা জোর করে নেওয়া সিদ্ধান্ত নয়। বরং অভিভাবক ও শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা করেই আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। সবাই এটা মেনে নিয়েছে কারণ আমাদের সমাজে ধর্মের প্রতি সবার আনুগত্য আছে।’
টিএম