গত বছরের নভেম্বরে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রাশিয়া আবারও হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৬ মার্চ) প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার বা হস্তক্ষেপের সিদ্ধান্ত খোদ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন অনুমোদন করেছিলেন বলেও গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি

প্রতিবেদনে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে আবারও বিজয়ী করতে ২০২০ সালের নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে হস্তক্ষেপ করার চেষ্টা করেছিল রাশিয়া। এক্ষেত্রে তাদের লক্ষ্য ছিল প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী জো বাইডেন ও তার দল ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সমালোচনা, তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন, নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর থেকে জনগণের আস্থা হ্রাস করানো এবং সর্বোপরি যুক্তরাষ্ট্রের আর্থ-রাজনৈতিক বিভাজনকে বাড়িয়ে তোলা।

তবে নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশের পর সেটা মেনে নিতে কোনো দেশই কার্পণ্য করেনি বলেও জানানো হয় প্রতিবেদনে।

মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানিয়েছে, সর্বশেষ এই গোয়েন্দা প্রতিবেদনটিতে গত বছরের নির্বাচনকে ঘিরে বিদেশি হুমকি ও হস্তক্ষেপের চেষ্টার বিষয়ে সবচেয়ে বেশি গবেষণা ও বিশ্লেষণধর্মী তথ্য সরবরাহ করা হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় দেশটির নাগরিকদের আস্থা হ্রাস করতে রাশিয়া ও ইরানসহ শত্রু রাষ্ট্রগুলোর চেষ্টার বিস্তারিত বিবরণ প্রতিবেদনটিতে তুলে ধরা হয়েছে।

১৫ পৃষ্ঠার ওই গোয়েন্দা প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, গত নির্বাচনে প্রভাব বিস্তার করতে মস্কোর মূল কৌশল ছিল রুশ গোয়েন্দাদের মাধ্যমে মার্কিন সংবাদমাধ্যম, কর্মকর্তাসহ ট্রাম্প ও তার প্রশাসনের ঘনিষ্ঠজনদের মাধ্যমে জো বাইডেনের নামে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক তথ্য ও অভিযোগ ছড়ানো। তবে ২০১৬ সালের নির্বাচনের মতো সাইবার এক্সেস পাওয়ার জন্য ২০২০ সালে রাশিয়াকে সচেষ্ট হতে দেখা যায়নি।

বিবিসি জানিয়েছে, নির্বাচনে বিদেশি হস্তক্ষেপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের বিচার মন্ত্রণালয় এবং হোমল্যান্ড সিকিউরিটি দফতরের যৌথ তদন্ত প্রতিবেদনেও মোটামুটি একই উপসংহার টানা হয়েছে। তবে তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নির্বাচনে রুশ ও ইরানের হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টাগুলো ছিল মূলত পরোক্ষ।

এক বিবৃতিতে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা কমিটির চেয়ারম্যান অ্যাডাম শিফ বলেন, নির্বাচনে সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে সমর্থন, বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে অভিযুক্ত করা এবং নির্বাচনী ব্যবস্থার ওপর থেকে জনগণের আস্থা হ্রাসের সক্রিয় চেষ্টা করেছিল রাশিয়া।

তবে নির্বাচনে হস্তক্ষেপের যেকোন দাবি সবসময়ই অস্বীকার করে এসেছে রাশিয়া।

উল্লেখ্য, গত বছরের নির্বাচনের আগে আগস্ট মাসে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানায়, আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করতে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে চীন, রাশিয়া ও ইরান। সেসময় গোয়েন্দা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল- নির্বাচনের ডেমোক্র্যাটদলীয় প্রার্থী জো বাইডেনকে ‘হেয় করার’ চেষ্টা করছে রাশিয়া। অন্যদিকে ট্রাম্পের পরাজয় চেয়েছিল চীন ও ইরান।

সূত্র: বিবিসি

টিএম