বায়ু দূষণে ২০২০ সালে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ হিসেবে শনাক্ত হয়েছে বাংলাদেশ। এরপর দ্বিতীয় স্থানে আছে পাকিস্তান, তৃতীয় ভারত। ২০২০ সালের বিশ্বের বায়ুর মানের ওপর ভিত্তি করে এই তালিকা প্রকাশ করেছে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক সংস্থা আইকিউএয়ার। 

পার্টিকুলেট ম্যাটার (পিএম-২.৫) বা বস্তুকণার ২.৫ মানের ওপর ভিত্তি করে বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত বায়ুর দেশ ও শহরের তালিকা প্রকাশ করেছে আইকিউএয়ার। 

আইকিউএয়ারের এই তালিকায় টানা তৃতীয় বারের মতো বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত রাজধানী চিহ্নিত হয়েছে নয়াদিল্লি। শীর্ষ দূষিত দেশ হিসেবে বাংলাদেশ শনাক্ত হওয়ার পাশাপাশি রাজধানী ঢাকা বিশ্বের দ্বিতীয় শীর্ষ দূষিত রাজধানী চিহ্নিত হয়েছে।

দ্বিতীয় স্থানে থাকা রাজধানী ঢাকার বায়ুতে পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-২.৫ এর উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ৭৭ দশমিক ১ শতাংশ ছিল।

অন্যদিকে, রাজধানীর তালিকায় তৃতীয় মঙ্গোলিয়ার উলানবাটরের প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে পিএম-২.৫ এর উপস্থিতি পাওয়া গেছে মাত্র ৪৬ দশমিক ৬ শতাংশ। এই দুই রাজধানী শহর টানা দুই বছর ধরে একই স্থানে রয়েছে।

সুইস এই সংস্থার মতে— গত বছর সামগ্রিক বায়ু মান বিবেচনায় বিশ্বের সবচেয়ে দূষিত দেশ চিহ্নিত হয়েছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বায়ুতে প্রাণঘাতী পার্টিকুলেট ম্যাটার বা পিএম-২.৫ এর উপস্থিতি প্রতি ঘনমিটারে ছিল ৭৭ দশমিক ১ শতাংশ; যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বেঁধে দেওয়া সীমার চেয়ে সাত গুন বেশি। বাংলাদেশের পরই এই তালিকায় আছে পাকিস্তান (দ্বিতীয়), ভারত (তৃতীয়), মঙ্গোলিয়া (চতুর্থ) এবং আফগানিস্তান (পঞ্চম)।

২০২০ সালের বিশ্বের শীর্ষ ৫০টি দূষিত শহরের তালিকায় ভারতেরই ৩৫টি শহর ঠাঁই পেয়েছে। মানব স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক বিভিন্ন ধরনের রোগ যেমন— প্রাণঘাতী ক্যান্সার এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করে পিএম-২.৫। আইকিউএয়ার বায়ূতে পিএম-২.৫’র যে উপস্থিতি পেয়েছে তা বৈশ্বিক স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত বিপজ্জনক বলে সতর্ক করে দিয়েছে।

এছাড়া বিশ্বের সবচেয়ে কম দূষিত শহর নির্বাচিত হয়েছে পুয়ের্তো রিকো, প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ফরাসী ভূখণ্ড— নিউ ক্যালেডোনিয়া এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিন দ্বীপপুঞ্জ।

গত বছরের বার্ষিক এই সূচকে দেখা গেছে, নয়াদিল্লির প্রতি ঘনমিটার বায়ুতে পিএম-২.৫ এর বার্ষিক ঘনত্বের পরিমাণ ছিল ৮৪ দশমিক ১ মাইক্রোগ্রাম; যা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) নির্ধারণ করে দেওয়া সহনীয় ১০ মাইক্রোগ্রামের চেয়ে ৮ গুণেরও বেশি।

গবেষকরা বলেছেন, ২০২০ সালে বৈশ্বিক বায়ু মানে তাৎপর্যপূর্ণ উন্নতি দেখতে পেয়েছেন তারা। বায়ু মানের এই উন্নতির পেছনে কাজ করেছে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বজুড়ে নেমে আসা লকডাউন। এ সময় বিশ্বজুড়ে হ্রাস পায় স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথের যোগাযোগব্যবস্থা, কমে যায় জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার। 

আইকিউএয়ার বলছে, গত বছর বিশ্বের ৬৫ শতাংশ শহরের বায়ু মানের উন্নতি ঘটেছে। আর দেশের হিসেবে বিশ্বের ৮৪ শতাংশ দেশে বায়ু মানের উন্নতি হয়েছে।

সূত্র: ডেইলি মেইল, সিএনএন।

এসএস