বেলারুশের প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো (ফাইল ছবি)

বেলারুশকে ইউরোপে চীনের একমাত্র মিত্রদেশ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো। বেইজিং সফরে গিয়ে সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) তার দেশকে ইউরোপে চীনের একমাত্র মিত্র হিসেবে আখ্যায়িত করেন তিনি।

মঙ্গলবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে রাশিয়ার বার্তাসংস্থা স্পুটনিক। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বেইজিং সফরে গিয়ে চীনা মিডিয়াকে সাক্ষাৎকার দেন প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো।

সোমবার প্রচারিত ওই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আসুন এটা স্বীকার করি: বেলারুশই ইউরোপের কেন্দ্রে একমাত্র দেশ যা চীনের প্রতি বন্ধুত্বপূর্ণ বা আমি বলতে পারি (একমাত্র বেলারুশই চীনের প্রতি) ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মনোভাব বজায় রাখে।’

লুকাশেঙ্কো চীনকে আশ্বস্ত করেছেন, দুই দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব আগামী কয়েক দশক ধরে অব্যাহত থাকবে এবং প্রেসিডেন্ট পদে তার মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও তা অব্যাহত থাকবে।

তিনি বলেন, ‘এটি সর্বদা সত্য থাকবে। আমি যখন বেলারুশের প্রেসিডেন্ট থাকবো কেবল তখনই নয়। অন্যরা যখন প্রেসিডেন্টের পদে থাকবেন তখনও এটা অব্যাহত থাকবে, কারণ আমাদের জনগণের মাধ্যমেই এই অবস্থান নেওয়া হয়েছে।’

বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, চীন এবং বেলারুশ ব্যাপক কৌশলগত একটি অংশীদারিত্ব তৈরি করেছে যা পশ্চিমাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞার বছরগুলোতে মিনস্কে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছে।

লুকাশেঙ্কো চাইনিজ কোম্পানিগুলোকে বেলারুশে গিয়ে কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানান এবং চীনের ‘ওয়ান বেল্ট ওয়ান রোড’ সংযোগ উদ্যোগকে ইউরেশিয়ান ইকোনমিক ইউনিয়নের সাপ্লাই চেইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা যেতে পারে বলে পরামর্শ দেন।

আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতিকে আটকিয়ে রাখতে চীন ও ইউরোপের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ওয়াশিংটন চীনে গৃহযুদ্ধ শুরু করার জন্য মানবাধিকারের বক্তৃতা বাড়াচ্ছে।

একইসঙ্গে বৈশ্বিক ‘ভারসাম্য বজায় রাখতে’ এবং বহুমুখী বিশ্ব ব্যবস্থা তৈরি করতে চীন যুক্তরাষ্ট্রকে সহায়তা করতে পারে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

উল্লেখ্য, প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কো ইউরোপের দীর্ঘতম শাসক। গত ২৮ বছর ধরে তিনি বেলারুশের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বেলারুশিয়ান এই প্রেসিডেন্ট রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিকভাবে রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীল এবং রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

প্রেসিডেন্ট পুতিনের সমর্থন তাকে ২০২০ সালে গণতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভের পরও ক্ষমতায় টিকে থাকতে সাহায্য করেছিল।

এছাড়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার যুদ্ধে সমর্থনের জন্য সাবেক এই সোভিয়েত রাষ্ট্রের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশ বিলিয়ন ডলার মূল্যের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।

টিএম