ফাইল ছবি

তিন সপ্তাহ আগের প্রাণঘাতী এক ভূমিকম্পের ক্ষত কাটিয়ে না উঠতেই তুরস্কে ফের ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। শনিবার স্থানীয় সময় দুপুরের দিকে দেশটির মধ্যাঞ্চলীয় আনাতোলিয়া প্রদেশের নিগদে শহর ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে।

ইউরোপীয়-ভূমধ্যসাগরীয় ভূমিকম্প কেন্দ্র (ইএমএসসি) বলেছে, তুরস্কের মধ্যাঞ্চলে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এই ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ভূপৃষ্ঠ থেকে ১০ কিলোমিটার গভীরে।

তবে তুরস্কের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সংস্থা আফাদ বলেছে, আনাতোলিয়া প্রদেশের নিগদে শহরে শনিবার আঘাত হানা ভূমিকম্পের গভীরতা ছিল ৭ কিলোমিটার। দুপুর ১টা ২৭ মিনিটে নিগদের বোর জেলায় এই ভূমিকম্প আঘাত হানে। তবে ভূমিকম্পে এখন পর্যন্ত কোনও ক্ষয়ক্ষতি কিংবা প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।

দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফুওয়াত ওকতে বলেছেন, ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ পর্যালোচনা করতে মাঠে নেমেছে উদ্ধারকারী দল।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় বলেছেন, ‘এই মুহূর্তে কোনো নেতিবাচক খবর নেই। সৃষ্টিকর্তা আমাদের দেশ ও জাতিকে সব ধরনের বিপর্যয় থেকে রক্ষা করুন।’

গত ৬ ফেব্রুয়ারির ৭ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চল থেকে প্রায় সাড়ে ৩০০ কিলোমিটার পশ্চিমে বোর জেলা অবস্থিত। সাম্প্রতিক ওই ভূমিকম্পে তুরস্কে ৪৪ হাজারের বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে। স্মরণকালের ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে সিরিয়ায় মারা গেছেন ৫ হাজার ৯১৪ জন।

তুরস্কের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, চলতি মাসের শুরুর দিকের ওই ভূমিকম্পের পর তুরস্কে ৯ হাজারের বেশি আফটারশক অনুভূত হয়েছে। আর ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ১ লাখ ৭৩ হাজারের বেশি ভবন এবং গৃহহীন হয়েছেন দেশটির প্রায় ২০ লাখ বাসিন্দা।

স্বেচ্ছাসেবক-সহ প্রায় ২ লাখ ৪০ হাজার উদ্ধারকর্মী তুরস্কের ভূমিকম্প-বিধ্বস্ত ১১টি প্রদেশে এখনও কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত কিছু এলাকায় প্রাথমিকভাবে পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়ে। ভূমিকম্পের ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে ফেলতে ব্যাপক বেগ পোহাতে হচ্ছে উদ্ধারকারী কর্মীদের।

তিন সপ্তাহ আগের এই ভূমিকম্পে এখন আর জীবিত কাউকে উদ্ধারের খবর পাওয়া যাচ্ছে না।

ব্যাপক ঘনবসতিপূর্ণ তুরস্কের ইস্তাম্বুল শহরে আরেকটি বড় ধরনের ভূমিকম্প আঘাত হানতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করছেন। তবে দেশটির একজন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ আশ্বস্ত করে বলেছেন, ইস্তাম্বুলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি বাড়েনি।

ইস্তাম্বুলের কান্দিলি অবজারভেটরির ভূমিকম্প-সুনামি পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পরিচালক দোগান কালাফাত ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘ঝুঁকি বাড়েনি কারণ আমরা সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যবস্থাপনার কথা বলছি।’

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, গত ৬ ফেব্রুয়ারির ভূমিকম্পে কেবল তুরস্কেই প্রায় ২ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। আর সিরিয়ায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন প্রায় ৪৪ লাখ মানুষ।

সূত্র: এএফপি, আলজাজিরা।

এসএস