ফাইল ছবি

কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে হস্তক্ষেপের অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে চীন। একইসঙ্গে নির্বাচনে হস্তক্ষেপ সংক্রান্ত কানাডিয়ান মিডিয়ার প্রতিবেদনগুলোতে উঠে আসা গোয়েন্দা নথিগুলোকেও ‘মিথ্যা’ হিসাবে উল্লেখ করেছে দেশটি।

এছাড়া এসব প্রতিবেদনের মাধ্যমে বেইজিংয়ের নামে কালিমা লেপনের চেষ্টা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেছে চীন। বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে সোমবার (২০ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, গত শুক্রবার কানাডার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ভ্যাঙ্কুভারে অবস্থিত চীনা কনস্যুলেট জেনারেলের অফিস থেকে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়। ওই বিবৃতিতে ‘চীনকে অপমানিত ও অসম্মান করার’ দায়ে কানাডিয়ান মিডিয়াকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে বিবৃতিতে ‘তীব্র অসন্তোষ’ও প্রকাশ করেছে চীন।

মূলত দ্য গ্লোব অ্যান্ড মেইল ​​পত্রিকার একটি প্রতিবেদনের পর চীন ওই বিবৃতিটি দেয়। গোপনীয় গোয়েন্দা নথির উদ্ধৃতি দিয়ে ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের কানাডার ফেডারেল নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করেছে বেইজিং।

পত্রিকাটি জানিয়েছে, নির্বাচনের আগে লিবারেল পার্টির নির্দিষ্ট কিছু প্রার্থীকে এগিয়ে নিতে চীনের সরকার কূটনীতিক এবং প্রক্সিদের ব্যবহার করে বিভ্রান্তিমূলক প্রচারাভিযানের নেতৃত্ব দেয়। মূলত কনজারভেটিভদের বিরুদ্ধে লিবারেল পার্টি দলটিকে বেইজিংয়ের পক্ষে বেশি অনুকূল বলে মনে করা হয়।

চীনা কনস্যুলেট জেনারেলের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, কর্তৃপক্ষ ‘বিভিন্ন সময়ই এটা স্পষ্ট করেছে যে- চীন সবসময় অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ না করার নীতি মেনে চলে এবং কানাডার কোনও নির্বাচনে কখনও হস্তক্ষেপ করেনি।’

এতে আরও বলা হয়েছে, এই ধরনের অভিযোগ ‘দুই দেশের জনগণের বন্ধুত্ব ও স্বার্থকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে।’

বিবৃতিতে পারস্পরিক বোঝাপড়ার উন্নতির জন্য ‘সংশ্লিষ্ট মিডিয়াকে পেশাদার নৈতিকতা মেনে চলতে, অবিলম্বে চীন ও কনস্যুলেট জেনারেলকে অযথা কোনও অভিযোগে দায়ী করা ও আক্রমণ করা বন্ধ করতে এবং আরও ভালো কাজ করতে’ আহ্বান জানানো হয়েছে।

এদিকে পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনের বিষয়ে গত শুক্রবার প্রশ্ন করা হলে কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জোর দিয়ে বলেন, তার সরকারের জয় পাওয়া গত নির্বাচনগুলো বৈধ ছিল। তিনি আরও বলেন, চীনা হস্তক্ষেপের প্রচেষ্টা সম্পর্কে তিনি ‘দীর্ঘদিন’ ধরে সচেতন, তবে কানাডিয়ানরা তাদের নির্বাচনের বিশুদ্ধতার ওপর ‘সম্পূর্ণ আস্থা’ রাখতে পারে।

এএফপি বলছে, ২০১৯ সালের নির্বাচনী প্রচারণার সময় চীন ১১ জন প্রার্থীর প্রচারণায় হস্তক্ষেপ করেছে বলে যে অভিযোগ রয়েছে সেটির তদন্ত করছে কানাডার সংসদীয় একটি কমিটি। ওই ১১ প্রার্থীর বেশিরভাগই ছিল লিবারেল পার্টির।

চীন-কানাডার সম্পর্ক কয়েক বছর ধরে উত্তেজনাপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বিশেষ করে চীনা বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের শীর্ষ নির্বাহী মেং ওয়ানঝোকে যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধে কানাডা ২০১৮ সালে গ্রেপ্তারের পর এই উত্তেজনা দেখা দেয়। যদিও তিনি ২০২১ সালে মুক্তি পান।

এর আগে গত নভেম্বরে প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো বলেছিলেন, বালিতে জি-২০ সম্মেলনের সাইডলাইনে কানাডিয়ান ইস্যুতে চীনা হস্তক্ষেপের বিষয়ে প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সাথে আলোচনা করেছেন তিনি।

তবে সেই আলোচনার বিস্তারিত নিশ্চিত করতে অস্বীকার করেছিলেন চীনা কর্মকর্তারা।

টিএম