বিশ্বের শীর্ষ ধনীদের তালিকায় ক্রমেই নিচের দিকে নামছেন ভারতীয় শিল্পপতি গৌতম আদানি। একসময় ধনীদের তালিকায় তৃতীয় স্থান দখল করেছিলেন এই ভারতীয় ধনকুবের। গত ২৫ দিনে তার সেই সিংহাসন ধসে পড়েছে। আদানি এখন আর ধনীদের তালিকায় প্রথম দশেও নেই। রোববার (১৯ ফেব্রুয়ারি) প্রকাশিত শীর্ষ ধনীদের তালিকায় দেখা যাচ্ছে, আদানি নেমে এসেছেন ২৪ নম্বরে।

গত ২৫ জানুয়ারি ফোর্বস পত্রিকার ধনীদের তালিকায় আদানি ছিলেন বিশ্বের তৃতীয়। ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্সও বলছে, ২৫ তারিখ বিকেল ৫টার সময় আদানির সম্পদের মূল্য ছিল ১১৯ বিলিয়ন অর্থাৎ ১১ হাজার ৯০০ কোটি ডলার।

এরপর প্রকাশিত হয় আমেরিকান সংস্থা হিন্ডেনবার্গের রিসার্চের আলোচিত সেই প্রতিবেদন। যেখানে আদানির বিরুদ্ধে কারচুপি করে শেয়ারের দাম বাড়ানোর অভিযোগ আনা হয়।

এরপরই শুরু হয় আদানি গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ারদরে রেকর্ড পতন। যা থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর কোনো উপায়ই আর কাজে লাগছে না আদানিদের। ফলে গত ২৫ দিনে আদানি গ্রুপের সম্পদ এক ধাক্কায় অর্ধেকেরও বেশি কমে দাঁড়িয়েছে ৫ হাজার কোটি ডলারের নিচে।

রোববার সকালে ফোর্বস পত্রিকার ধনীদের তালিকার তথ্য অনুযায়ী, আদানির সম্পদমূল্য এসে ঠেকেছে ৪ হাজার ৯৭০ কোটি ডলারে। স্বাভাবিকভাবেই এর প্রভাব পড়েছে বিশ্বের ধনী তালিকায় আদানির স্থানেও।

গত ২৫ দিনে শেয়ার বাজারে নিজেদের উত্থানের কম চেষ্টা করেনি আদানি গ্রুপ। ঋণ শোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, ঋণের একাংশ শোধও করেছে। পাশাপাশি প্রকাশ্যে এনেছে গত তিন মাসের লাভের হিসাব। শেষে আদানি আশ্বাসবাণী দিয়েছেন।

নানা যুক্তি দেখিয়ে প্রত্যাখ্যান করেছেন আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগও। কিন্তু তাতে লাভের কিছু হয়নি। মাঝে আদানি গ্রুপের শেয়ারের দর সামান্য বাড়লেও তারপর থেকে তা আবার নিম্নমুখী হয়েছে।

মূলত সমুদ্রবন্দর, বিমানবন্দর এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যবসায় যুক্ত আদানি গ্রুপ। ১৯৮০ সাল থেকে তারা ব্যবসা করছেন। যদিও তিন বছর আগে আদানিদের সম্পত্তির মূল্য ছিল ৮৯০ কোটি ডলার।

তারপর হঠাৎ উত্থান হয় তাদের। ২০২১ সালে আদানি গ্রুপের সম্পদের মোট মূল্য পৌঁছেছিল চার হাজার কোটি ডলারে। পরের বছর অর্থাৎ ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যায় এই সম্পদ।

৮ হাজার ৮৫০ কোটি ডলার মূল্যের সম্পদের মালিক আদানি প্রথমে এশিয়ার তৃতীয় শীর্ষ ধনী হন। তারপর বিশ্বের ধনীদের তালিকাতেও তিন নম্বরে উঠে আসেন। তবে দ্রুত উত্থান হওয়া আদানির পতনও একইগতিতে শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

/এসএসএইচ/